শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রপ্তানিবাণিজ্যে আঞ্চলিক হাব

চট্টগ্রাম বন্দরে

চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে ইউরোপের নতুন আরও একটি রুটে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশ স্লোভেনিয়ার পোর্ট অব কোপারের সঙ্গে সরাসরি কনটেইনার জাহাজ চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্লোভেনিয়ান পোর্ট অব কোপারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছে।

সূত্রমতে, ইউরোপীয়ন ইউনিয়নভুক্ত দেশ স্লোভেনিয়ার পোর্ট অব কোপারের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরে সরাসরি কনটেইনার জাহাজ চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে একটি প্রতিনিধিদল গত সোমবার চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসানের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে আসা প্রতিনিধিদল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ওই বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও প্লানিং) জাফর আলম, পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম, ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম, ভারপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দিন, বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক এম আহসানুল হক, প্রাক্তন পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, পোর্ট অব কোপারের প্রতিনিধি হিসেবে পোর্ট অব কোপারের কমার্শিয়াল ডিরেক্টর মিৎসা ডুকস, স্লোভেনিয়ার বাংলাদেশের অনারারী কনসাল মিহা গ্রোসনিক, পোর্ট অব কোপারের ম্যানেজার বরুত সিম্রেল, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার এসোসিয়েশনের (বাফা) সভাপতি কবির আহমেদ, সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজনসহ বন্দর এবং বিজিএমইএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম. শাহাজাহান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নপূর্বক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্যিক হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরসমূহে কনটেইনার স্বল্পতা ও জাহাজ সংকটের কারণে পণ্য পরিবহনে ব্যয় ও সময় বেড়ে যায়। এর প্রেক্ষিতে দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পণ্য পরিবহনে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরসমূহ পরিহার করে ইতালি, ইংল্যান্ড, রোটারডেম, ডেনমার্ক, পর্তুগাল বন্দরসমূহে সরাসরি কনটেইনার জাহাজ চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে বিদেশি ক্রেতাদের সময় এবং খরচ অনেকাংশ হ্রাস পাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড়া হলো ১৯৯ টন পেঁয়াজ

বর্তমানে স্লোভেনিয়ার পোর্ট অব কোপারের সঙ্গে সরাসরি জাহাজ চলাচলের উদ্যোগকে সফল করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি এক্ষেত্রে বিদেশি ক্রেতা, শিপিং কোম্পানিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

পোর্ট অব কোপারের কমার্সিয়াল ডিরেক্টর মিৎসা ডুকস বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহে তৈরি পোশাকসহ বিপুল পরিমাণ পণ্য চালান বিভিন্ন ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টের মাধ্যমে রপ্তানি হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পণ্য পরিবহনে স্লোভেনিয়ার পোর্ট অব কোপার বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সরাসরি জাহাজ পরিচালনা করে হলে সময় ও অর্থ অনেকাংশে সাশ্রয় হয়ে রপ্তানি বাণিজ্যের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং পূর্ব ও মধ্যইউরোপে বাংলাদেশের সঙ্গে রপ্তানিবাণিজ্যে বিশাল সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে। সরাসরি পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে স্লোভেনিয়ার পোর্ট অব কোপার বন্দরের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে মর্মে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিপিং কোম্পানিসহ ব্যবসায়ী মহল ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন।

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে বর্হিবিশ্বে প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য, ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর সমূহের সময়ক্ষেপণ ও জাহাজ জট এড়ানোর লক্ষ্যে এবং সময় ও খরচ কমানোর স্বার্থে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রপ্তানিতব্য দেশসমূহে পণ্য প্রেরণে সরাসরি জাহাজ চলাচলের কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নভুক্ত স্লোভেনিয়ার পোর্ট অব কোপার চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে সরাসরি পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি আরো বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুনঃ  দক্ষতা বাড়ছে বন্দরের

চট্টগ্রাম থেকে ইউরোপের বিভিন্ন রুটে জাহাজ চলাচলের ধারাবাহিকতায় স্লোভেনিয়ায় নতুন রুট চালু হলে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় ধরণের ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন তিনি।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন