শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দশ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ

পূর্বগাঁও ইকোনমিক জোন-

মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার একর জমির ওপর ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। যেখানে কর্মসংস্থান হবে দেশের এক কোটি মানুষের। তারই অংশ হিসেবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের আওতাধীন পূর্বগাঁও ইকোনমিক জোনকে ২১তম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯৪ একর জমির উপর পূর্বগাঁও ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হবে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অদূরে রূপগঞ্জ উপজেলায় প্রাথমিকভাবে ৯৪ একর জমিতে এ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হবে। ভবিষ্যতে এই ইকোনমিক জোনকে ১৫০ একরে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানায় সিটি গ্রুপ। বেজা’র সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পূর্বগাঁও ইকোনমিক জোন স্থাপনের প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করে বেজা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুণ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান।

যোগাযোগ বিবেচনায় থেকে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল অত্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত বিধায় নৌপথ ও সড়কপথে যোগাযোগের সুব্যবস্থা রয়েছে। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটির অবস্থান রাজধানী থেকে ২৫ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

সিটি গ্রুপের পরিচালক সম্পা রহমান জানান, পূর্বগাঁও ইকোনমিক জোনে স্টিল মিলস, কেমিক্যালস্ এবং সিরামিক পণ্যখাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে অগ্নিনির্বাপন ও নিরাপত্তায় জোর দেয়া হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন সিটি গ্রুপকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ঢাকার নিকটবর্তী স্থানে হওয়ায় পূর্বগাঁও ইকোনমিক জোন দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাবে বলে বেজা আশা করে। তিনি প্রত্যাশা করেন, পূর্বগাঁও ইকোনমিক জোনের উদ্যোক্তাগণ জোনের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষার কাজ দ্রুত শেষ করে চূড়ান্ত লাইসেন্স নিয়ে শিল্প নির্মাণ কাজ শুরু করবে।

আরও পড়ুনঃ  বাজেটে জীবন-জীবিকায় জোর

শেখ ইউসুফ হারুণ জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরীতে ইতোমধ্যে ১৫৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১২ হাজার একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে ৪-৫টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে এসেছে। বিভিন্ন কোম্পানি শ্রীলঙ্কা থেকে ‍বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে দেশে বিনিয়োগের জন্য জমি চাচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে সেভাবে জমি প্রস্তুত নেই জানিয়ে তিনি অভিযোগ করে বলেন, অনেকে জমি নিয়ে কোনো কাজে লাগাচ্ছে না। সেসব জমি বেশি দামে বিক্রির চিন্তাও করেছে কেউ কেউ। তবে প্রধানমন্ত্রী গত মাসে পতিত জমির বরাদ্দ বাতিল করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে কারো মুখের দিকে না তাকিয়ে বরাদ্দ বাতিল করার হুঁশিয়ারি দেয়েছেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান।

সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, পূর্বগাঁও অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার কোটি টাকা করা হবে যার মাধ্যমে কর্মসংস্থান হবে প্রায় ১১ হাজার লোকের। তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামী ৫ মাসের মধ্যে সকল প্রকার সমীক্ষার কাজ শেষে চূড়ান্ত লাইসেন্স পাওয়া সাপেক্ষে শিল্প নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফজলুর রহমানবলেন, ৫০ বছরের পরিশ্রমে আমি ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। ১৯৭২ সাল থেকে এখনো এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সিটি গ্রুপ ইতিমধ্যে দুটি অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সিটি ইকোনমিক জোনের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তাছাড়া তাদের হোসেনদি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজও ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি। অনুষ্ঠানে অন্যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিটি গ্রুপের পরিচালক সম্পা রহমান, বেজার নির্বাহী সদস্যবৃন্দ ও সাহব্যবস্থাপকগণ এবং সিটি গ্রুপের কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুনঃ  এলসিতেই আগ্রহ সরকারি ব্যাংকের

উল্লেখ্য, বেজা ইতোমধ্যে ২০টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে প্রি কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করেছে যার মধ্যে ১২টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এসব বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইতোমধ্যে প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে এবং কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার জনের।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন