শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উৎপাদন বাড়লেও রপ্তানিতে ভাটা

উৎপাদন বাড়লেও রপ্তানিতে ভাটা

দেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চা উৎপাদিত হলেও সে অনুযায়ী রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। কেননা দেশে অর্থনৈতিক উন্নতি হওয়ায় ঘরে ঘরে মানুষ চা পান করে। এতে করে দেশে যদিও চা’র উৎপাদন বেশি তারপরও বিদেশে রপ্তানি করা যাচ্ছে না। তবে এসব চা যতদ্রুত সম্ভব বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

শুধু ২০২১ সালে দেশের ১৬৭টি বৃহৎ ও ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে ৯ কোটি ৫ লাখ ৬ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। যা ২০২০ সালে ছিল ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৮ হাজার কেজি। এতে এক কোটি এক লাখ ১১ হাজার কেজি বেশি উৎপাদিত হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে সমতলের চা বাগান ও ক্ষুদ্র চা চাষ থেকেও ২০২১ সালে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি চা জাতীয় উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে। ২০২০ সালে ছিল এক কোটি ৩ লাখ কেজি। ২০১৯ সালে ছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন বৃহৎ চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭টি এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানের সংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি। আমাদের চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে চার ব্যবহার কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে ঘরে ঘরে চার ব্যবহার বাড়ছে। সে কারণে উৎপাদন বাড়লেও রপ্তানি করতে পাচ্ছি না। কারণ আমাদের দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। চার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নতুন ও উন্নতজাত উদ্ভাবনে গবেষণা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কৃষকদের চা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি-কনফারেন্স কমাতে হবে

টিপু মিনশি আরো বলেন, এতোদিন শুধু দেশের পাহাড়ি অঞ্চল অর্থাৎ চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার ও সিলেটে চা উৎপাদিত হতো, এখন দেশের উত্তারঞ্চল পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিহাটের সমতল ভূমিতেও উৎপাদিত হচ্ছে। এতে অন্য ফসল চাষে অনুপযোগী জমিগুলোতে চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। ফলে দেশে চা-শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে বিপুল পরিমাণ চা রপ্তানি করতে পারবো।

বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত আসন্ন ৪ জুন দ্বিতীয় জাতীয় চা দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৮৪০ সালে এখানে ব্যক্তি উদ্যোগে চা উৎপাদন শুরু হয়, তবে বাণিজ্যিকভিত্তিতে শুরু হয় ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনিছড়া চা বাগানে। চা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫১ সালে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন থেকে ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। সে কারণেই ৪ জুনকে জাতীয় চা দিবস হিসাবে বেছে নেয়া হয়েছে।

আগামীকাল ৪ জুন বেলা ১১টায় ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চা দিবস উদযাপন করা হবে। এখানে আলোচনা সভার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চা প্রদর্শন ও বিক্রয় করার ব্যবস্থা থাকবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। দিনব্যাপী এ চা মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ঢাকার পাশাপাশি দেশের চা উৎপাদনকারী অঞ্চলের জেলাগুলোতে রেলি, আলোচনা সভা ও চা মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  আজ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাতিঘ শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমানসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টি বোর্ডের সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন