শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মরুর ত্বীন চাষ নাঙ্গলকোটে

মরুর ত্বীন চাষ নাঙ্গলকোটে

প্রতিটি পাতার গোড়ায় গোড়ায় সবুজ ত্বীন ফল, যা পাকা শুরু হয়েছে, এখন লাল খয়েরি বা মেরুন রং ধারণ করছে। যা ফল এসেছে তা নিজেরাই খাচ্ছেন এরই মধ্য দিয়ে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে প্রথম বারের মত মধ্যপ্রাচের ত্বীন ফল চাষে সফল হয়েছেন কৃষক জামাল উদ্দিন। পৌর সদরের নাওগোদা গ্রামের মৃত. ফজলুর রহমানের ছেলে জামাল উদ্দিন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শখের বশিভূত হয়ে পৌর সদরের নাওগোদা গ্রামের আমেরিকার প্রবাসি মোরশেদ আলম মনু, আব্দুর রফ সরকার ও প্রিন্স এ তিন বন্ধু মিলে ২ শতাধিক ত্বীন গাছের চারাসহ  ১৭ প্রজাতির ফলজ গাছ নিয়ে ৪ বিঘা জায়গার উপর একটি ফলের বাগান গড়ে তোলেন। ওই বাগান লালন পালন করার দায়িত্ব দেন জামাল উদ্দিনকে। ওই প্রবাসীরা স্পেন, তুরস্ক, মিসর, ইরান থেকে এ ত্বীন ফলের চারাগুলো সংগ্রহ করেন। গত বছর রোপন করেন। বর্তমানে প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ফল আসে।

ত্বীন দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুতে চাষাবাদের উপযোগী তা প্রমাণ করেছেন কৃষক জামাল উদ্দিন। তার সফলতা দেখে অনেকেই এ ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছে। প্রান্তিক কৃষক পর্যায়ে এ ফলের চাষ ছড়িয়ে দিতে তিনি। ডুমুর আকৃতির ত্বীন গাছে ফল আসতে শুরু হওয়ায় দৃষ্টি কেড়েছে স্থানীয়দের।

জামাল উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও ইউটিউব দেখে বাগানটি তার মনেরমত গড়ে তুলেন। বর্তমানে বাগানে ত্বীন ফল ছাড়াও রয়েছে আপেল, আনার, ফল, ড্রাগন, শসা কমলা, প্রজাতের আম, রেড অরেঞ্জ, আপেল কুল, লেবু, অ্যাভোকাটা ফল, রেড রেডি, ফার্সি মন, পেপে, ১৭১ মরিচ ও মিরা ফলের গাছ।

আরও পড়ুনঃ  বেড়েছে দাম কমেছে বিক্রি

পাশাপাশি এসব গাছে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে মাটির গুণাগুণ ঠিক রাখতে নিজের উৎপাদিত একটি কেঁচো  ভার্মি কম্পোস্ট সার নিজ বাগানে ব্যবহার করেন। 

এ বিষয়ে জামাল উদ্দিন বলেন, তিনি কোকা কোলা কোম্পানিতে চাকরি করতেন। বাগান মালিক আমেরিকার প্রবাসি মোরশেদ আলম মনু তাকে এ বাগান পালন পালনের দায়িত্ব দেন। চাকরি ছেড়ে দিয়ে এ বাগানে কাজ করছেন। বাগানে ১৭ প্রজাতের ফল গাছ রয়েছে। উপসহকারি কৃষি অফিসার জোনায়েদ হোসেনের সহযোগিতা এ সব গাছে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে মাটির গুণাগুণ ঠিক রাখতে গড়ে তুলেন একটি কেঁচো সারের খামার। সফলও হয়েছেন তিনি। রাসায়নিক সার ব্যবহার করা লাগে না। ফলনও ভালো হয়। বাগান থেকে ত্বীন ফল ও আনার ফল তুলেছি। যার ফলন অনেক ভালো হয়েছে।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত এ ফলটি ঔষধি গুণসম্পন্ন এবং স্বাদে মিষ্টি। ব্রেস্ট ক্যান্সার রোধে এ ফলটি খুবই উপকারী। এছাড়া নানা রোগ নিরাময়ে বিশেষ করে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ত্বীন। এটি চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য ও হাঁপানি রোগ নিরাময়েও সহায়তা করে। মানসিক ক্লান্তি দূর করে। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ক্যালিসিয়ামসহ নানা ভেষজ গুণ।

এ বিষয়ে পৌরসভা ব্লকের উপসহকারি কৃষি অফিসার জোনায়েদ হোসেন বলেন, তিনি সব সময় পরামর্শ দিতেছি। তার বাগানে ত্বীনের ফল এসেছে ভালো ফলন হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন