শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাঠেই পড়ে আছে চাষির স্বপ্ন

মাঠেই পড়ে আছে চাষির স্বপ্ন

শ্রমিক সংকট

  • বেশি খরচেও মিলছে না শ্রমিক

মেঘ দেখলে মনে ভয় ধরে। প্রেসার বেড়ে যায়। ধান কাটার জন্য সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হয়

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে চলতি বোরো মৌসুমে ১২ হাজার হেক্টোর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় কৃষকদের পরিচর্যায় মাঠের ধান পেকে গেছে। সোনালি বর্ণে আর শীষে ধানগুলো কৃষকের উঠানে যাবার অপেক্ষায়। তবে অধিকাংশ মাঠের ধান এখনো জমিতে পড়ে আছে। একদিকে ঘুর্ণিঝড় খবরে মহাবিপাকে কৃষকরা। অন্যদিকে শ্রমিক সংকটেও রয়েছেন দিশেহারা। যদিও বাজারে নতুন ধানের দাম ৯শ’ টাকা আর একজন শ্রমিকের দিন মজুরিও ৯শ’ টাকা।

সরেজমিনে চাষিরা জানায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও সময়মত কীটনাশক ব্যবহারে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কোনো কোনো জমিতে শতক প্রতি এক মণ ধান হয়েছে। এরই মধ্যে ৭০-৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে। আবার কোনো কোনো জমিতে ৯০ ভাগ ধান পেকেছে। প্রতি শ্রমিক দিন প্রতি ৯শ’ থেকে ১হাজার টাকা করে তাদের মজুরি নিচ্ছেন। তারপরও ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে কাড়াকাড়ি। কে কার আগে নিয়ে ধান কাটাবে। ধান মাঠে পড়ে থাকলেও তেমন ক্ষতি হবে না। শুধু আকাশটা খোলসা পাওয়া দরকার।

বাংগড্ডা ইউপির, রামারবাঘ, কাদবা, রায়কোট উত্তর ইউপির রায়কোট, মাহিনী, দৌলতপুর, মৌকরা ইউপি গোমকোট, মাঝিপাড়া, মৌকরা, পেরিয়া ইউপির মাধবপুর, পেরিয়া, আশারকোটা, শ্রীফলিয়াসহ উপজেলা প্রায় গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ধানকাটার কাজে তেমন শ্রমিক নেই। প্রান্তিক চাষি ও বর্গা চাষিরা নিজের ধান কাটায় ব্যস্ত।

আরও পড়ুনঃ  ‘বিদেশ নামক সোনার হরিণের পেছনে ছুটবেন না’

এ বিষয়ে কথা হয় তালেচৌ গ্রামের কৃষক সাগরের সঙ্গে, তিনি হতাশার সুরে  বলেন, এবার ৪ একর জমিতে বোরো আবাদ করছেন। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। ধান ক্ষেতে গেলে মণ ভরে যায়। প্রায় সব ধান এক সঙ্গে পাকতে শুরু করেছে। তবে শ্রমিকের অভাবে সময়মত ধান কাটতে পারছেন না তিনি।

কাদবা গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, মেঘ দেখলে মনে ভয় ধরে। প্রেসার বেড়ে যায়। ধান কাটার জন্য সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হয়। তারা প্রতি একর ধান চুক্তিতে কাটে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। একটু বৃষ্টি হলে চলে যায় ১৫ হাজার টাকায়।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। জালা অঞ্চলের ধানগুলো আগে কাটা হয়েছে। শ্রমিক সংকট দুর করার জন্য হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আর প্রতিটি কৃষি মাঠে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা তদারকি করছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন