রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেমিট্যান্সে ফের ভাটা

রেমিট্যান্সে ফের ভাটা

দুই বছরে সর্বনিম্ন প্রবাহ

  • জানুয়ারিতে ১৪৬০০ কোটি টাকা
  • ফেব্রুয়ারিতে ১২৮৬৫ কোটি টাকা
  • এক মাসেই কমেছে ১৭৩৫ কোটি টাকা

যেসব প্রবাসী দেশে আটকা পড়েছিলেন তারা এখন সেসব দেশে কাজের উদ্দেশ্যে ফিরে যাচ্ছেন। তারা পুরোদমে কাজে ফিরলে রেমিট্যান্স বাড়বে।

করোনা মহামারিতে একের পর এক রেকর্ড করেছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। তখন প্রবাসীরা তাদের আয়ের অধিকাংশ অর্থই দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কায় অনেকেই ব্যবসা বন্ধ করে জমানো অর্থ পাঠিয়ে দিয়েছেন দেশে। অবৈধ সকল পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এসব অর্থ বৈধ পথে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যে কারণে বিগত কয়েক মাসে রেকর্ড পরিমান রেমিট্যান্স আসে দেশে। তবে সংক্রমণ কমায় ফের কমতে শুরু করেছে প্রবাসী আয়। গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এসেছে ফেব্রুয়ারি মাসে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা টাকার হিসাবে (১ ডলার ৮৬ টাকা ধরে) ১২ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে এসেছিলো ১৭০ কোটি ৪৩ লাখ ডলার বা ১৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ভাটা গেছে। এই মহামারির মধ্যেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত রেখেছিলেন। এতে প্রথম দিকে প্রতিমাসেই বেড়েছে রেমিট্যান্সের পরিমাণ। তবে গত বছর এপ্রিল মাসের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স কমতে থাকে। তবে গত ডিসেম্বরে কিছুটা খরা কাটিয়ে উঠলেও ফেব্রুয়ারিতে ফের ধস নামে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ১৪৫ কোটি ২২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭৮ কোটি ৫৯ লাখ ডলার বা ১৫ হাজার ১৭২ কোটি ৫০ লাখ টাকা (১ ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে)।

আরও পড়ুনঃ  চেক জালিয়াতির মামলায় ২ বছরের জেল, চারগুণ অর্থদণ্ড

আর ২০২২ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে ১৭০ কোটি ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিপরীতে গত বছর জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৬ কোটি ডলারের বা ১৬ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় কমেছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছে, যেসব প্রবাসী দেশে আটকা পড়েছিলেন তারা এখন সেসব দেশে কাজের উদ্দেশ্যে ফিরে যাচ্ছেন। তারা পুরোদমে কাজে ফিরলে রেমিট্যান্স বাড়বে। তাছাড়া নতুন করে অনেক দেশ কর্মী নিয়োগ শুরু করেছে। আবার নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে সরকার রেমিট্যান্সপ্রবাহে নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে। এসব কারণে সামনের দিনগুলোতে রেমিট্যান্স বাড়বে।

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ২৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮৭ হাজার ২১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা তার আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার কম। আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রথম ছয় মাসে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ২৯৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন