শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম বন্দরে নিলাম কার্যক্রম, নানা জটিলতায় গতির সুফল পাচ্ছেনা বিডাররা

চট্টগ্রাম বন্দরে নিলাম কার্যক্রম

পণ্যজট কমানোর লক্ষে প্রতি মাসে দুটি করে নিলাম আয়োজন করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর ফলে কাস্টমসে নিলাম কার্যক্রম গতি পূর্বের চেয়ে বেড়েছে। কিন্তু নানা জটিলতায় সুফল পুরোপুরি পাচ্ছেন না বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী)।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, নিলামকৃত পণ্যের মামলা এবং নিলামকৃত পণ্যের সংরক্ষিত মূল্যের সাথে বাজার মূল্যের বিস্তর ফারাক রয়েছে। আবার বিভিন্ন জটিলতাও আছে। পাশাপাশি বন্দরের কন্টেনার জট নিরসনে মিথ্যা ঘোষণার আটক। এছাড়া অখালাসকৃত পণ্য নিলামে তুলে প্রতি মাসে অন্তত দুটি করে নিলাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যথাসময়ে সর্বোচ্চ দরদাতাদের অনূকুলে বিক্রয় অনুমোদন দিচ্ছে। তবে আইনগত জটিলতার কারণে অনেক সময় পণ্য শেষ মূহূর্তে খালাস নিতে পারছেন না বিডাররা।

বিডাররা বলছে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেশিরভাগ সময়ই নিলামে পণ্য তোলার সময় ওই পণ্যের কোনো মামলা আছে কিনা খতিয়ে দেখে না, কিন্তু নিলামের পণ্য অনুমোদন পেয়ে খালাস পর্যায়ে দেখা যায়, আমদানিকারকের মামলা রয়েছে। তখন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পণ্য খালাস প্রক্রিয়া ঝুঁলে যায়। এছাড়া নিলাম পণ্যের সংরক্ষিত মূল্যে রয়েছে বর্তমান বাজারমূল্যের সাথে বিস্তর ফারাক। একারনে একই পণ্য বারবার নিলামে উঠানো হলেও সেগুলোতে বিডারদের কোনো আগ্রহ থাকছে না।

নিলাম শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, এক সময় নিলামের স্থায়ী আদেশ মতে,‘সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ’কমিটির বৈঠক করা হতো না, তবে এখন পণ্য নিলামে তোলার আগেই বৈঠকে মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শুল্কায়ন শাখা থেকে মূল্য নিয়ে ক্যাটালগে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়া পরবর্তীতে নিলাম কমিটি যাছাই-বাছাই শেষে পণ্যের সংরক্ষিত মূল্য উল্লেখ করে ক্যাটালগ প্রকাশ হয়।

আরও পড়ুনঃ  রিজার্ভ কমলো আরও ৩০ কোটি ডলার

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, নিলাম কার্যক্রমে গতি বেড়েছে, এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় নিলাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেটি খুব বেশি ফলপ্রসু হচ্ছে না।

পণ্যের সংরক্ষিত মূল্য নিয়ে বেশিরভাগ বিডারদের আপত্তি থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, যে পণ্যের বর্তমান বাজারমূল্য ১০০ টাকা সেটি নিলামের ক্যাটালগে সংরক্ষিত মূল্য ধরা ১৫০ টাকা । একটি নির্দিষ্ট সময় পণ্য পড়ে থাকলে তার কিছু অবচয় থাকে, কিন্তু কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি বিবেচনায় নেয় না। এতে একাধিকবার নিলামে তোলার পরেও পণ্য বিক্রি করতে পারছে কাস্টমস। এছাড়া আরেকটি সমস্যা হলো- কোনো একটি পণ্য সর্বোচ্চ দরদাতার অনূকুলে বিক্রয় অনুমোদন দেয়ার পর সেই পণ্যে আগে থেকেই আমদানিকারকের মামলা রয়েছে। এক্ষেত্রে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেই পণ্য খালাসের সুযোগ থাকেনা। এছাড়া বিডারদের পে-অর্ডারও আটকে যায়। এতে হয়রানি ও লোকসান গুনে বিডাররা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখার সদ্য সাবেক উপ-কমিশনার মো. আল আমিন বলেন, নিলামের পণ্য ক্যাটালগভুক্ত করার সময় মামলা আছে কিনা, সেটি যাছাই-বাছাই করা হয়। দীর্ঘসময় মামলা চলা পণ্যও নিলামে তোলা হয়, এক্ষেত্রে ক্যাটালগে বলা হয়, মামলা নিষ্পত্তি সাপেক্ষে পণ্য খালাস করা যাবে। তবে সমস্যা হচ্ছে, অনেক সময় আমদানিকারক পণ্য নেয় না, কিন্তু যেই মাত্র নিলামে তোলা হয়, তখন আমদানিকারক মামলা করে দেন। এক্ষেত্রে বিডাররদের আমরা বিক্রয় অনুমোদন দেয়ার পরেও পণ্য দিতে পারি না।

আরও পড়ুনঃ  ইলিশ ঘাটে জেলেদের মলিন মুখ

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন