শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ নিতে গিয়ে ১২ ফিলিস্তিনির মর্মান্তিক মৃত্যু

বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ নিতে গিয়ে ১২ ফিলিস্তিনির মর্মান্তিক মৃত্যু

বিমান থেকে প্যারাসুটের মাধ্যমে সাগরে ফেলা ত্রাণ আনতে গিয়ে অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি পানিতে ডুবে গেছেন। সোমবার (২৬ মার্চ) বেঈত লাহিয়া উপকূলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্যারামেডিকরা।

সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, তারা একটি ভিডিও পেয়েছে। সেটিতে দেখা গেছে, সাগরে ত্রাণ ফেলার পর সেগুলো আনতে দৌড়াদৌড়ি করছেন সাধারণ ফিলিস্তিনিরা। অপর একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ডুবে যাওয়া মানুষদের উদ্ধার করে তীরে আনা হয়েছে এবং তাদের বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

স্থানীয় আবু মুহাম্মদ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছেন, ত্রাণগুলো উপকূল থেকে অনেক দূরের সমুদ্রে ফেলা হয়েছিল। এরপর সাঁতার না জানা অনেক পুরুষও সেগুলো নিতে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ওই সময় শক্তিশালী স্রোত ছিল এবং সব প্যারাসুট পানিতে পড়েছিল।

মানুষ ক্ষুধার্থ। তারা খেতে চায়। আমি কিছুই পাইনি। যারা তরুণ তারা দৌড়ে গিয়ে এসব ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারে। কিন্তু যাদের একটু বয়স বেশি তাদের জন্য গল্পটা অন্যরকম। আমরা সবগুলো স্থলপথ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ ধরনের অপমানজনক পদ্ধতি মানা যায় না বলে জানিয়েছেন আবু মুহাম্মদ।

প্রসঙ্গত, এ মাসের শুরুতে গাজা সিটির আল শান্তি ক্যাম্পে বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ মাথায় পড়ে পাঁচজন নিহত ও ১০ জন আহত হন। ওই সময় দাতব্য সংস্থাগুলো জানায়, বিমান থেকে ত্রাণ ফেলা কোনো কার্যকরী পদ্ধতি নয়। মানুষের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দিতে হলে সেগুলো স্থলপথে পাঠাতে হবে।

এদিকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা ‘অত্যধিক বেশি’ বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। ওয়াশিংটনে গত মঙ্গলবার গ্যালান্টের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে বক্তৃতাকালে অস্টিন বলেন, গাজায় পৌঁছানো মানবিক সহায়তার পরিমাণও ‘খুব কম’। পেন্টাগনপ্রধান আরও বলেন, গাজা মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এবং দুর্ভিক্ষ এড়ানোর জন্য আমাদের অবিলম্বে সহায়তা বৃদ্ধির প্রয়োজন এবং সমুদ্রপথে অস্থায়ী মানবিক করিডোর খোলার জন্য আমাদের কর্মকাণ্ড এই কাজকে সাহায্য করবে। কিন্তু মূল বিষয় হলো- স্থলপথে সাহায্য বিতরণ আরও প্রসারিত করা।

আরও পড়ুনঃ  ফের সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলা, নিহত ১

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান এই হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। পানি, খাবার ও নিরাপদ স্থানের অভাবে উপত্যকাটির বাসিন্দারা মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। সূত্র: সিএনএন

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন