শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় চিকিৎসাকর্মী, সংবাদিক ও ত্রাণকর্মী নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় চিকিৎসাকর্মী, সংবাদিক ও ত্রাণকর্মী নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় আট হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন, যার মধ্যে তিন হাজার শিশু ও দুই হাজারেরও বেশি নারী। অন্তত ২০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। তবে এদের ভিড়ে গাজায় ১২৪ চিকিৎসাকর্মী, ৩৪ সাংবাদিক ও জাতিসংঘের ৫৯ ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন।

গাজায় ১২৪ চিকিৎসাকর্মী নিহত:

গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ১২৪ জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালের ২৫টি অ্যাম্বুলেন্সও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সেগুলো এখন আর কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

জ্বালানির অভাবে হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই সেখানে ৩০টির বেশি হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে আর চিকিৎসাসেবা দেওয়া যাচ্ছে না। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদ্রসা বলেন, ৩২টি মেডিকেল সেন্টার এখন আর সেবা দিতে পারছে না। বিভিন্ন স্থানে হাসপাতালগুলোকে টার্গেট করে হামলার সংখ্যা বাড়ছেই।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৩৪ সাংবাদিক:

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় এ পর্যন্ত ৩৪ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর থেকে ২৩ দিনের নির্বিচার বোমা হামলায় এ নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদলু। বিবৃতি অনুসারে, ইসরায়েলের হামলায় ৩ নারীসহ ৩৪ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও অনেক সাংবাদিক তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন।

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় জাতিসংঘের ৫৯ ত্রাণকর্মী নিহত:

ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থানের ৫৯ কর্মী নিহত হয়েছেন। রোববার এক বিবৃতিতে নিহতের এ সংখ্যা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

এছাড়াও, ইসরায়েলের বোমা হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ৪৭টি মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ধ্বংস হয়ে গেছে ৭টি গির্জাও। গত ৭ অক্টোবর থেকে চালানো অবিরাম হামলায় এসব মসজিদ ও গির্জা ধ্বংস হয়। গাজার গণমাধ্যম কার্যালয় আরও জানায়, এসব হামলায় ২০৩ স্কুল ও ৮০টি সরকারি কার্যালয় ধ্বংস হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  বন্যা-অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় কাজ করবে নেপাল-বাংলাদেশ

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে আট হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন, যার মধ্যে তিন হাজার শিশু ও দুই হাজারেরও বেশি নারী। অন্তত ২০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপর থেকেই গাজায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১৪০০ জন নিহত এবং ২২৯ জনকে জিম্মি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। হামাস নজিরবিহীন হামলা চালানোর পর থেকে গাজায় বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

অবরুদ্ধ গাজার ২২ লাখের বেশি বাসিন্দা এখন খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সংকটে ভুগছে। শনিবার ইন্টারনেট বন্ধেরও হুমকি দিয়েছে তারা। গত (রোববার) রাফাহ ক্রসিং খুলে দেওয়ার পর থেকে অল্প কয়েকটি ট্রাক জরুরি সহায়তা নিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন