শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নিহত বেড়ে ৬৫৪৬

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ২৪ ঘণ্টায় ৭৫৬ ফিলিস্তিনির মৃত্যু

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ২৪ ঘণ্টায় ৭৫৬ ফিলিস্তিনির মৃত্যু

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর নির্বিচার হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একদিনে রেকর্ড ৭৫৬ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় শিশুসহ ৭৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর হামাসের সাথে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৬ হাজার ৫৪৬ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ২ হাজার ৭০৪ জন শিশু রয়েছে। টানা ১৯ দিন ধরে চলে আসা এই যুদ্ধে আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ৪৩৯ ফিলিস্তিনি। এর আগে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় একদিনে সর্বোচ্চ ৭০৪ জনের প্রাণহানির ঘটনার রেকর্ড হয়েছিল সোমবার।

অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ৪০৫ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ৩০৮ সৈন্য ও ৫৮ পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। এছাড়া হামাসের অব্যাহত হামলায় ইসরায়েলে আহত হয়েছেন আরও ৫ হাজারের বেশি মানুষ।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি হামলায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজার প্রায় ৩০ শতাংশ হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। এসব হাসপাতালে আহত ও মুমূর্ষু রোগীদের আর চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ (১২টি) এবং ৭২টি স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকের প্রায় দুই তৃতীয়াংশই (৪৬টি) বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরায়েলি বিমান হামলায় ক্ষয়ক্ষতির শিকার অথবা জ্বালানির সংকটের কারণে এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধ হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, গাজার হাসপাতালগুলোতে জেনারেটর সচল রাখার মতো আর ৪৮ ঘণ্টার জ্বালানি রয়েছে। এরপরই সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ  বাইডেনের পরমাণু সমঝোতায় ফেরার পথ কঠিন করেছেন ট্রাম্প

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়ার একদিন পর গাজা উপত্যকায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল। এই অবরোধ আরোপের কারণে গাজায় বিদ্যুৎ, খাবার, ওষুধ, পানি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর চালান সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ গাজায় ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধের তীব্র সমালোচনা করে সেখানে মানবিক ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে কয়েক দফায় খাবার, পানি, ওষুধসহ অন্যান্য কিছু পণ্য সামগ্রীবাহী ট্রাককে মিসরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশের সুযোগ দিয়েছে ইসরায়েল।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, জ্বালানির তীব্র সংকটের কারণে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে গাজা। এই উপত্যকায় জ্বালানির সরবরাহের অনুমতি দেওয়া না হলে জাতিসংঘ ত্রাণ তৎপরতা বন্ধ করে দেবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি। সূত্র: আলজাজিরা

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন