শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতে মন্দিরের প্রসাদ নিয়ে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা

ভারতে মন্দিরের প্রসাদ নিয়ে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা

ভারতের নয়াদিল্লিতে মন্দিরের প্রসাদ চুরির অভিযোগে এক মুসলিম যুবককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সুন্দর নাগরি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ওইদিন গণেশ চাতুর্থি উৎসব উপলক্ষ্যে প্রসাদ ও ধর্মীয় প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। সেখানেই এমন নির্মম ঘটনা ঘটে।

আল জাজিরার বরাতে জানা যায়, নিহত ওই যুবকের নাম মোহাম্মদ ইশহাক। তিনি মঙ্গলবার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখানেই তার বিরুদ্ধে প্রসাদ চুরির অভিযোগ তোলা হয়। এরপর খুটির সঙ্গে বেঁধে তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। মারধরের পর অপর এক যুবক তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর বাড়িতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ইশহাক।

ভ্যানে করে তরকারি বিক্রি করা ওয়াজেদ জানান অনেক হিন্দু কাস্টমার তাকে প্রসাদ দিয়ে থাকেন। সেগুলো তিনি কোনো চিন্তা-ভাবনা না করেই নেন। ইশহাকের বাবা ওয়াজেদ আল জাজিরাকে বলেছেন, আমি সবকিছু হারিয়েছি। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে কারণ সে প্রসাদ খেয়েছিল। যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তারা মুসলিম যুবকের প্রসাদ স্পর্শ করার বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করেছে।

আল জাজিরাকে ইশহাকের বোন উজমা বলেছেন, আমার ভাইকে একটি কলা নেওয়ার জন্য লাঞ্চনা করা হয়েছে। কিছু উশৃঙ্খল ব্যক্তি তাকে খুটিতে বেঁধে নির্মম নির্যাতন করেছে। তার নখ ভেঙে ফেলা হয়েছিল। তার আঙ্গুল কাটা ছিল। তাকে নির্মমভাবে মারা হয়েছে কারণ সে মুসলিম। নির্যাতনের পর সে আর কথা বলতে পারেনি। ইশহাকের পরিবার জানিয়েছে, তারা তাকে হাসপাতালে নেননি। ফলে বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুনঃ  ১০ ঘন্টায় ১লাখ আনলাইক তামাশায়

স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, ইশহাক মারা যাওয়ার পর তাদের খবর দেওয়া হয়। এদিকে ইশহাককে নির্যাতন করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরপরই সাধারণ মানুষ এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানান। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের পর পুলিশ ৬ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে। ওই এলাকার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তথ্যে তারা জানতে পেরেছেন চোর সন্দেহে ইশহাককে আটকায় একটি দল। এরপর তাকে বেঁধে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। এদিকে ইশহাকের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।

সূত্র: আল জাজিরা

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন