ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্যাস বেলুন জীবিকা

গ্যাস বেলুন জীবিকা

মো: মুজাম্মেল হোসেন (৪০)। তার পরিবারে মা’সহ ৭ জন সদস্য রয়েছে। তার বাড়ি কুমিল্লায় হেমনায় হলেও ও জীবিকার প্রয়োজনে গত দুই বছর ধরে আখাউড়ায় বসবাস করছেন। এক সময় সে দৈনিক মজুরিতে পরিশ্রমের কাজ করেছেন। বর্তমানে রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সে নানা রঙের হাতি, ঘোড়া,জেব্রা, ডলফিন মাছ, কুমির,বিমান, পাখি, ফুল ও উড়োজাহাজের গ্যাস বেলুন বিক্রি করছেন। পৌর শহরের বিভিন্ন জায়গায় পায়ে হেটে ওইসব রঙ-বেরঙের বেলুন প্রতি পিচ বিক্রি করছেন ৫০ টাকায়। দৈনিক সে ৬০-৭০ পিচ বিক্রি করে এতে তার ৫শ টাকার উপর তার আয় হচ্ছে । আর এতেই চলছে তার জীবিকা। মোজাম্মেল বলেন নানা কারণে পরিশ্রমের কাজ করতে পারছি না। তাই এসব বেলুন বিক্রি করছি। হাটে বাজারে স্কুলে এসবের ভালো চাহিদা রয়েছে। শুধু মোজাম্মেল নয় তৌহিদ, মামুন, সিরাজসহ বেশ কয়েকজন এসব গ্যাস বেলুন বিক্রি করে জীবিকা অর্জন করছেন।

সরেজমিনে পৌর শহরের সড়ক বাজার, লাল বাজার, খড়মপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে গিয়ে দেখা যায় রঙ-বেরঙের নানা জাতের গ্যাস এক মাথায় সুতো দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। বাতাসে উড়ছে বেলুন। ওইসব বেলুন দেখে আকৃষ্ট হচ্ছে শিশুরা। অভিভাবকরাও শিশুদের আনন্দ দিতে তাদের কাছ থেকে ক্রয় করছেন। স্থানীয় বাজারে গ্যাসভর্তি এইসব উড়ন্ত বেলুনের চাহিদা ভালো থাকায় এক একটি বেলুন ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন।

গৃহিণী রোমানা আক্তার বলেন, তার ১ মেয়ে ১ ছেলে রয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজ করতে ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে আখাউড়ায় আসেন। পোষ্ট অফিসের সামনে বেলুন দেখে ক্রয় কারর জন্য ছেলে বায়না ধরে। এক পর্যায়ে ৫০ টাকা দিয়ে উড়োজাহাজ বেলুন তার জন্য কেনা হয়। এই বেলুন পেয়ে ছেলে খুবই খুশি।

মো: রতন মিয়া বলেন, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। তিন দিনের ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসনে। বিকালে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসে সড়ক বাজার থেকে ছেলে জন্য গ্যাস বেলুন কেনা হয়। ৩য় শ্রেণির ছাত্র স্কুল ছাত্র মো: আশরাফুল ইসলাম জানায়, বেলুন তার খুবই পছন্দের। বাবার সাথে ঘুরতে এসে একটি মাছ আকৃতির গ্যাসবেলুন কেনা হয়। এতে যেন তার আনন্দের আর শেষ নেই।

পৌর শহরের খড়মপুর এলাকায় কথা হয় বেলুন বিক্রেতা মো: মামুন মিয়ার সাথে। তিনি বলেন এক সময় তিনি শ্রমিকের কাজ করতেন। গত ৫ বছর ধরে তিনি রোদ-বৃষ্টি ভিজে হাট বাজার, স্কুলের সামনে গ্যাস বেলুন বিক্রি করছেন। প্রতিদিন ৬০-৬৫টি পিচ বেলুন বিক্রি হয়ে থাকে। দৈনিক ৫শ থেকে ৬শ টাকার উপর আয় হয় বলে জানায়। আর বেলুন বিক্রির আয় দিয়েই চলছে তার সংসার। শবিক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তার বাড়ি কুমিল্লায়। গত দুই বছর ধরে আখাউড়ায় বসবাস করছেন। এখানে তিনি হাট বাজারে গ্যাসবেলুন বিক্রি করছেন। ছোট শিশুদের কাছে ওইসব রঙিন বেলুনের ভালো চাহিদা রয়েছে। এক একটি বেলুন ৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন। এসব বেলুন তিনি কুমিল্লা থেকে ক্রয় করে বিক্রি করছেন। তিনি আরো বলেন সারা বছর ওইসব বেলুন বিক্রি হলেও ঈদ,পুজা, বিশেষ দিন ও মেলায় ভালো বিক্রি হয়।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন