শীতের সকালে ঘন কুয়াশা আর গোধূলিলগ্নে ঝাঁকবেধে আকাশে উড়ে পাখি। সারিবদ্ধভাবে ডানামেলে আকাশের বুকে আনন্দচিত্তে ওরা কলকাকলিতে মেতে ওঠে। তাদের আনন্দে আন্দোলিত হয় প্রকৃতিও। প্রকৃতির পালাবদলে পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে বাংলাদেশে। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিযায়ী পাখির দেখামিলে। শীত আসলেই পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয় কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
সাইবেরিয়াসহ পৃথিবীর শীতপ্রধান দেশগুলো থেকে এসময় পরিযায়ী পাখিরা বাংলাদেশে আসে। এরই ধারবাহিকতায় প্রতিবছর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় লেক সংলগ্ন পুকুর পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়। গেল বছরের তুলনায় চলতি বছর পাখি বেশি এসেছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করছে। এখানে আসা বেশির ভাগ পাখিই হাঁস জাতীয়। সবচেয়ে বেশি এসেছে সরালি হাঁস। অন্যান্য পাখির মধ্যে ল্যাঞ্জা হাঁস, খুনতে হাঁস, বালি হাঁস, মানিকজোড় প্রভৃতি রয়েছে। আকাশে উড়ে বেড়ানোসহ জলকেলিতে মেতে উঠছে এসব পাখি। পুকুরে কেউ সাঁতার কাটছে, কোনোটা মনের সুখে উড়ে বেড়াচ্ছে আকাশে। আবার কোনোটা গাছের এ-ডাল থেকে ও-ডাল ঘুরে নেমে আসছে পানিতে। কিছু আবার পালকের ভিতর মুখগুঁজে রোদ পোহাচ্ছে। পাখিদের এ রকম খুনসুটি আর কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।
তবে পাখি আসলেও কয়েকদিন পরে ফের উড়ে যায়। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এমনটি ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন দর্শনার্থীরা। পুকুরজুড়ে কচুরিপানা থাকায় পাখিরা স্বাচ্ছন্দ্যে বিচরণ করতে পারছে না বলেও দর্শনার্থীদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ওবাইদুর রহমান আনাস বলেন, ‘প্রতিবছর অতিথি পাখি আসতে দেখি। তবে কয়েকদিন পরে পাখিগুলো উড়ে যায়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি উদাসীন। পুকুর কচুরিপনাসহ ময়লা ফেলানো হয়, ফলে পাখিরা মুখ ফিরিয়ে চলে যায়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টিপু সুলতান বলেন, ‘এবছর পরিযায়ী পাখিগুলো ধরে রাখতে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। যাতে পাখিগুলো উড়ে না যায়।’
আনন্দবাজার/এম.আর