বাংলাদেশে মোট ১৫ লাখ স্থানীয়ভাবে হিজড়া বলে পরিচিত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ রয়েছে। তবে শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারে তারা দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলা এবং বঞ্চণার শিকার।
তৃতীয় লিঙ্গের মুসলিমদের জন্য দেশের প্রথম মাদ্রাসা চালু করা হয়েছে। আজ (৬ নভেম্বর) শুক্রবার মাদ্রাসাটি যাত্রা শুরু করেছে। বৈষম্যের শিকার লিঙ্গ গোষ্ঠীকে সমাজের মূল ধারায় যোগ করার ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে একে অভিনন্দন জানিয়েছেন আলেম সমাজের অনেকে।
সেই বৈষম্য হ্রাসেই উদ্যোগ রাজধানীর অদূরে কামরাঙ্গীচর ছাতা মসজিদ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত দাওয়াতুল ইসলাম তৃতীয় লিঙ্গ মাদ্রাসা। এখানে কোরান তেলাওয়াত শেখা এবং ইসলাম ধর্মের অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল শনিবার (৭ নভেম্বর) থেকেই ভর্তির কার্যক্রম শুরু হবে।
মরহুম আহমেদ ফেরদৌস বারী চৌধুরী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এই মাদ্রাসাটি চালু হয়েছে। এই মাদ্রাসায় পড়ালেখার জন্য হিজড়াদের কোনও খরচ লাগবে না। ২০২০ সালে সরকার স্বীকৃত কওমী সিলেবাস অনুযায়ী মাদ্রাসাটি পরিচালিত হবে।
শুক্রবার ৫০ জন হিজড়া শিক্ষার্থী পবিত্র কোরান তেলাওয়াতের মাধ্যমে মাদ্রাসার উদ্বোধন করেন।
শাকিলা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী এএফপি’কে বলেন, ”আমি খুব আনন্দিত। আলেমরা এত সুন্দর একটি উদ্যোগ নেওয়ায়, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা অনুভব করছি।”
শাকিলা কন্যা শিশু হিসেবেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ডাক্তার বা উকিল হবেন। কিন্তু, বয়সন্ধির সময়ে তার শারীরিক কিছু পরিবর্তন আসে। তখন থেকেই বাড়ি ছেড়ে হিজড়াদের দলের সঙ্গে থাকা শুরু করেন।
তিনি আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ”সমাজের কেউ আমাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করে না। ধর্মে মুসলমান হলেও আমরা মসজিদে যেতে পাড়ি না।”
মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ মাওলানা মুফতী মোহাম্মদ আব্দুর রহমান আজাদ এবং তার নেতৃত্বে একদল আলেম; এই বৈষম্য হ্রাসে হিজড়াদের শিক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।
আগে থেকেই অবশ্য কামরাঙ্গিরচর-সহ রাজধানী ঢাকার বেশ কয়েকটি স্থানে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের ইসলামী শিক্ষা দিয়ে আসছেন তারা।
আনন্দবাজার/ইউএসএস