জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ইসরায়েল কর্তৃক নির্মমভাবে ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও শিশুহত্যার প্রতিবাদে কবিতা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে কবিতা সমাবেশ’ শীর্ষক এ আয়োজন করেছে সাহিত্য সংগঠন চিরকুট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকাল চারটায় এ কবিতা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়৷ এতে কবিতার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানান কবি-সাহিত্যিক ও আবৃত্তিশিল্পীরা৷
কবি-সাহিত্যিকদের এই মিলনমেলায় কবিতা পাঠ করেন কবি হাসান রোবায়েত, পলিয়ার ওয়াহিদ, শব্দ নীল, মিছির হাসনাইন, জহির ফয়সাল, শাকিব লোহানী, তালুকদার লাভলী, জেবুন্নেসা জেবা, সাজিদা স্মিগ্ধা, আনিস মুহাম্মদ, সাদ্দাম হোসেন, হামিদা জান্নাত, ও তাহমিদ হাসান প্রমুখ।
কবিতা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক আহমেদ রেজা বলেন, ‘কবি ও সাহিত্যিকরা সবসময় মানবিক হন। ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে তাই এ ধরণের আয়োজন প্রশংসনীয়। এ সময় তিনি সম্মিলিতভাবে ‘আমরা করবো জয়’ গানটি গেয়ে শোনান।’
সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার লুৎফুল ইলাহী বলেন, ‘আধিপত্যবাদী ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিপরীতে আমরা তথাকথিত মুসলিম বিশ্বকে সবসময় নীরব দেখেছি। অথচ ইসরায়েলের গণহত্যার সমর্থনে মানবতার ধ্বজাধারীরা জোট বেঁধে মাঠে থাকেন।’
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খোরশেদ আলম বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে এ কবিতা সমাবেশকে স্বাগত জানাই। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যুদ্ধের বিপরীতে পৃথিবীতে শান্তি নেমে আসুক। গাজার নারী-শিশুসহ সবাই শান্তিতে বাঁচুক।
কবিতা সমাবেশে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীসহ সংহতি জানান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল। এসময় তিনি পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থানের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘আজকে তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা দেশগুলো ইসরায়েলের গণহত্যাকে সমর্থন করছে। আমরা তাদের এ দ্বিমুখী নীতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’ এছাড়া সংহতি জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সোহাগী সামিয়াসহ আরো অনেকেই।
সমাপনী বক্তব্যে চিরকুট সভাপতি মেহেদী মামুন বলেন, ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিষয়টি বিশেষ কোনো ধর্মের বা বর্ণের বিষয় নয় বরং একটি দখলদার রাষ্ট্রের সাথে কতিপয় দখলদার রাষ্ট্রের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিরীহ ও নিরস্ত্র নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের যুদ্ধ। আমরা যেমন কোনো অন্যায় আগ্রাসনকে সমর্থন করি না তেমনি সমর্থন করি না কোনো ধরণের হত্যা-গণহত্যাও। আমাদের আজকের এ কর্মসূচি ইসরায়েলী আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে কবি ও সাহিত্যমোদী জনগণের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। আমরা বিশ্বাস করি এ কর্মসূচিতে পাঠ করা কবিতার প্রতিটি অক্ষর নিপীড়নের বিরুদ্ধে তীব্র আঘাত। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে এ প্রতিবাদে শামিল হওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
কবিতা সমাবেশের আহ্বায়ক আহসান লাবিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া সুমু, সংগঠক আলিফ মাহমুদ ও আশফার রহমান নবীন প্রমুখ।
