শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলায় হাফিজকে পরিণত ঐশ্বর্য সম্পদে রূপান্তর করেন নজরুল

বাংলায় হাফিজকে পরিণত ঐশ্বর্য সম্পদে রূপান্তর করেন নজরুল

বাংলা সাহিত্যে মহাকবি হাফিজকে পরিণত ঐশ্বর্য সম্পদে রুপান্তর করেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। মঙ্গলবার (১৬ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে “নজরুল বিষয়ক” সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

‘নজরুল গবেষণা’ কেন্দ্রের আয়োজনে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফাতেমা কাওসারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মুমিত আল রশিদ, বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. নাজমুল হোসেন এবং রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান লিপন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মুমিত আল রশিদ বলেন, মহাকবি হাফিজের সঙ্গে নজরুলের কালগত ব্যবধান কয়েক শতাব্দীর। হাফিজের ‘দীওয়ান’ অনুবাদের মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যে ফারস্যের ‘শারাব-সাকি’ ও প্রেম কাব্যের এক নতুন মাধ্যমের সূচনা হয়। এর মধ্য দিয়েই হাফিজকে বাংলায় পরিণত ঐশ্বর্য সম্পদে রূপান্তরের সূচনা করেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
সেমিনারে নজরুলের নাটক বিচারে সমস্যা এবং নাটক পাঠে ভিন্ন দৃষ্টিকোন তৈরির উপরে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. নাজমুল হোসেন। নজরুল প্রতিভা ও নজরুলের অনুবাদের উপরে বিশেষ প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. হোসনে আরা।

নজরুলের নাটক বিচারে নাটকে গানের আধিক্যতার কথা উল্লেখ করে মো. নাজমুল হেসেন বলেন, নজরুল নাটক ও গানের যে মেলবন্ধন তা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, মাটির মানুষের চাহিদার এক নিদারুণ সামঞ্জস্যতা। নাটকে তৈরিতে নজরুল এক বিপ্লবী ধারা রচনা করেছে। নজরুলের নাটক তৈরিতে সাংস্কৃতির অংশ থেকেও রাজনৈতিক অংশের প্রাধান্য ছিলো উল্লেখযোগ্য। নজরুল কখনো ঐতিহ্যের অন্ধ অনুকরন করেনি। বরং ঐতিহ্যের সাথে নিদারুন বুঝাপড়ার মধ্য দিয়েই এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। উপনিবেশ বিরোধী নাটক নির্মাণ ছিলো তার নাটকের অন্যতম উপজীব্য।

আরও পড়ুনঃ  বেরোবিতে শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করবে ব্রুডা

নজরুলের অনুবাদ শাখায় দক্ষতার কথা উল্লেখ করে ড. হোসনে আরা বলেন, ইরানী কবিদের মধ্যে নজরুল নিজেকে সবচেয়ে বেশি আবিষ্কার করেছেন রুবাইয়াৎ হাফিজ এবং ওমার খৈয়ামকে। শুধু রুবাইয়াৎ হাফিজ বা ওমার খৈয়ামের কবিতা অনুবাদে তাঁর প্রতিভার সমাপ্তি ঘটেনি। কবিদের চিন্তা চেতনার ধারক বাহকও ছিলেন তিনি। কবির একধিক কবিতায় ফারস্যের চিন্তা চেতনার সামঞ্জস্যতা বিরাজমান। তবে ধর্মীয় বিশ্বাস, কবিতার লিখনিতে মেলবন্ধন থাকলেও ফারস্যের কবিদের মতো কাজী নজরুল ইসলাম ভোগবাদী ছিলেন না। ‘শারাব-সাকি’ নিয়ে মত্ত থাকার যে প্রচলন তা কবির মাঝে লক্ষনীয় নয়।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন