শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষাথীদের না জানিয়ে অনলাইনে ভর্তির আবেদন

শিক্ষাথীদের না জানিয়ে অনলাইনে ভর্তির আবেদন

এসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্চ মাধ্যমিকে (এইচএসসি) অনলাইনে ভর্তির আবেদন করেলে তা আবেদন করা হয়েছে বলে রিপ্লাই আসে। ওইসব শিক্ষার্থীরা ভর্তির আবেদন করেতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারে। আবেদন না করেও তাদের মোবাইলে ম্যাসেজ আসায় তারা নিশ্চিত হয় এবং আবেদনগুলো তাদেরই কলেজে প্রথম চয়েজ দেখানো হয়েছে। গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা এ অভিযোগ করেন। শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির ভর্তির আবেদনের ওয়েবসাইটে লাল কালিতে উল্লেখ রয়েছে ‘অনুমতি ব্যাতীত অপরের আবেদনপত্র পূরণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ’। এ নিয়ে গত রবিবার ভুক্তভুগী ১২ জন শিক্ষার্থী বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে চলতি বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার  রোল নং ১২৬১২১) জানান,  আমি বা আমার পরিবারের কেউ উচ্চ মাধ্যমিকে (এইচএসসি) অনলাইনে আমার ভর্তির আবেদন করেনি এবং টাকা জমা না দেইনি। অথচ, গত ৮ ডিসেম্বর আমার মোবাইল ফোনে মেসেজ এসেছে ভর্তির আবেদন সাকসেসফুল (ইউর অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন হেজ বিন সাবমিটেড সাকসেসফুলি এন্ড ইউর সিকিউরিটি কোড—) এবং ভর্তির জন্য ১৫০টাকাও জমা হয়ে গেছে। ওই আবেদনে ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী  জমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের নাম ফার্স্ট চয়েজসহ পাশের কালিয়াকৈর ও কাপাসিয়া উপজেলার একাধিক কলেজের নাম দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীরা স্বজনদের সাথে নিতে পারবেন না

তিনি আরো জানান, বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্থানীয় কম্পিউটার দোকানে অনলাইনে আমার পছন্দের কলেজের নাম উল্লেখ করে আবেদন করতে যাই। এসময় অনলাইনে আমার আবেদনটি রিসিভ হচ্ছিল না। আগের আবেদনটিও বাতিল করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি আমি আমার বাবাসহ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সানোয়ার হোসেনের কাছে গেলে তিনি বলেন, দুইটি বছরইতো। থাকনা এ প্রতিষ্ঠানেই। আমাদের ছাত্রী আমাদের এখানেই থাক।

একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ হওয়া অপর শিক্ষার্থী আজিম হোসেন (রোল নং ৩১৫২৯১) অভিযোগ করে বলেন, আমি এবছর ওই প্রতিষ্ঠানের মানবিক শাখা থেকে জিপিএ ৩.০৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমি ওই প্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখায় ভর্তির জন্য অনলাইনে কোন ফি দেইনি কিংবা ভর্তির কোন আবেদন করিনি। আমার অনুমতি না নিয়ে ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ’র নাম উল্লেখ করে সেখানে আমার ভর্তির জন্যও আবেদন করেছে তারা। এজন্য তিনি তার আবেদন বাতিল ও বিনা অনুমতিতে কেন তার আবেদন করা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের লিখিত আবেদন করেছি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে।

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থী মাহফিল হোসেন একই অভিযোগ করে জানান, এবিষয়টি কেন করা হয়েছে আমার অভিভাবক জানতে চাইলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে অশালীন কথা বলেন এবং তাকে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে দেবে না বলে জানায়।

 একই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের তানিয়া আক্তার (রোল নং ৫২২৩৯৯), মুসফিকুর রহমান (রোল নং ৫২২৪৬২), নুসরাত জাহান নাবিলা  (রোল ৫২২৩৪৫), মহিন হায়দার  (রোল নং- ৫২২৪৫৮), আশিক হোসেন  (রোল নং ৫২২৬৮৫), আজিম হোসেন (রোল নং-৩১৫২৯১), শারমিন আক্তার মিম (রোল নং ২০৭১৩৬), ফাতেমা আক্তারসহ (রোল নং ১২৬১২৮) আরো অনেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান বরাবর একই লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুনঃ  ৭ কলেজের স্থগিত পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ

ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ প্রধান শিক্ষক  সানোয়ার হোসেন জানান, স্কুলের কেউ তথা আমি নিজে এসএসসি উত্তীর্ণ কোন শিক্ষার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন করে দেইনি। যেসব শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে আবেদন করে দেয়ার জন্য এসেছে শুধুমাত্র তাদেরকেই আমরা আবেদন করে সহযোগীতা করেছি মাত্র। তবে, তিনি এও স্বীকার করেন আমরা কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বুঝিয়ে অনুরোধ করে আমাদের কলেজে আবেদন করার জন্য বলেছি। তবে সে সংখ্যাটি কতজন তা তিনি জানেন না বলে জানান।

গাজীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা জানান, শিক্ষার্থীদের অজ্ঞাতে এভাবে আবেদন করা দণ্ডণীয় অপরাধ। এ ব্যাপারেতিনি ভুক্তভোগী শীক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন। 

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন