শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়ছে স্বপ্ন কমছে বরাদ্দ

বাড়ছে স্বপ্ন কমছে বরাদ্দ
দেশে শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার ঘটছে। সুযোগ সম্প্রসারিত হচ্ছে প্রান্তিক পর্যায়ে। প্রতিবছর পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হারও বিস্ময়কর। বেশি বেশি অবকাঠামো সুবিধা আর নতুন শিক্ষাক্রমও প্রণয়ন করা হচ্ছে। তবে শিক্ষার মান বাড়ছে না। এর মধ্যেই ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। অথচ সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতির আগেই দক্ষ জনবলের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। উদ্যোক্তারা বলছেন, শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে কোটিরও বেশি দক্ষ জনবলের অভাব। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে আসা তরুণদের দিয়ে সেই চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। দক্ষ জনবলের ভয়াবহ সংকট নিয়ে ফারুক আহমেদ আরিফ ও ইয়াহহিয়া নকিবের আজকের বিশেষ প্রতিবেদন ‘বাড়ছে স্বপ্ন কমছে বরাদ্দ’।

তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের সুফল ঘরে তোলার আগেই বাংলাদেশের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। ইতোমধ্যে বিশ্বের দেশে দেশে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রধান অনুসঙ্গ শিক্ষাকাঠামোয় সংস্কারসহ ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সময়ের দাবি অনুযায়ী তথ্যপ্রযুক্তিতে দারুণ দক্ষ জনবল তৈরিতে রোডম্যাপ তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্যাপক বিনিয়োগও হচ্ছে।

আজকের আমেরিকার বিশ্ব মোড়ল হওয়রার পিছনে শিক্ষায় দেশটির বিশ্বব্যাপী বৃত্তির মাধ্যমে মেধাবীদের জ্ঞান ব্যবহারের বিষয়টি সামনে চলে আসে। সম্প্রতি বিশ্ব পরাশক্তি হতে বুদ্ধিবৃত্তিক আধিপত্য দখলে একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি স্কলারশিপ দিচ্ছে চীন। তাছাড়া ইউরোপের উন্নয়নের পিছনেও জ্ঞানের রেঁনেসো বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হয়।

বিশ্বে ১২৫টির মতো দেশ আছে যারা শুধু শিক্ষার উন্নয়নেই প্রতিবছর অন্তত এক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে। সেখানে বাংলাদেশে অবকাঠামো, পরিচালনসহ সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে মোট ৭১ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। যা মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ০৮ ভাগ। যেখানে ইউনেস্কোর চাওয়া জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ।

বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, শিক্ষায় সরকারি বরাদ্দের হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। যেখানে ভুটান ৬ দশমিক ৬ শতাংশ (২০১৮), নেপাল জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ (২০১৮), আফগানিস্তান ৪ দশমিক ১ শতাংশ (২০১৭), মালদ্বীপ ৪ দশমিক ১ শতাংশ (২০১৬), ভারত ৩ দশমিক ০ শতাংশ (২০১৯), পাকিস্তান ২ দশমিক ৯ শতাংশ ( ২০১৭), শ্রীলঙ্কা ২ দশমিক ৮ শতাংশ (২০১৭) শিক্ষায় বিনিয়োগ করে। অথচ এক্ষেত্রে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকে (নলেজ ইনডেক্স) ১৩৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১২তম। বাংলাদেশের ওপরে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভূটান, ভারত, পাকিস্তান—সবাই।

আরও পড়ুনঃ  সংকট নেই সার বীজ জ্বালানির

জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকের (এসকাপ) এক প্রতিবেদনেও ৩৬টি দেশের শিক্ষা খাতের ব্যয় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, শিক্ষাখাতে বাংলাদেশ জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ ব্যয় করে, যা ওই দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। বাংলাদেশের চেয়ে কম ব্যয় করে শুধু কম্বোডিয়া।

দেশে শিক্ষার দ্রুত বিস্তার, বেশি বেশি অবকাঠামো, নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন হচ্ছে ঠিকই হবে, শিক্ষায় গুণগত মানে কোনো উন্নতি ঘটেনি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ আসার আগেই শিল্পখাতে দক্ষ জনবলের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশে কোটিরও বেশি দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। দেশীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যেসব গ্রাজুয়েট বের হচ্ছেন, তাদের দিয়ে বিশাল চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে উচ্চশিক্ষিত তরুণদের সংখ্যা স্রোতের প্রবাহের মতো যে হারে বাড়ছে, সে হারে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেও চাকরি পাচ্ছেন না দেশের ৬৬ শতাংশ তরুণ। অথচ দেশে এক কোটি দক্ষ জনবলের অভাবে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কর্মহীন বেকার জনশক্তি তৈরি করে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে চাকরির বাজারে এসে তারা হতাশায় ডুবে যাচ্ছেন। উচ্চশিক্ষিতদের তাই এখন প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) কোটায় চাকরি। এ ব্যাপারে জনৈক শিক্ষাবিদ হতাশা প্রকাশ করে দেশে বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা বলেছেন।

শিক্ষাখাত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দক্ষ জনবল তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যর্থতার মূল কারণ শিক্ষাব্যবস্থায় সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার অভাব। সেইসঙ্গে শিক্ষায় বিনিয়োগের ধারণা প্রতিষ্ঠিত করা। যে কারণে বাজেটে বরাদ্দ একেবারেই কম। শিক্ষাখাতকে আর দশটা খাতের মতোই চিহ্নিত করছেন নীতিনির্ধারকরা। তারা অন্যান্যখাতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই শিক্ষায় বরাদ্দ নির্ধারণ করছেন।

মূলত, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় যে ধরনের দক্ষ জনবল দরকার সে ধরনের শিক্ষাক্রম কিংবা পরিকল্পনা করা হচ্ছে না। সম্প্রতি এক ওয়েবিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ারের চেয়ারম্যান এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন করলেও বেকার সমস্যা পুরোপুরি সমাধানে সক্ষম হইনি। এর মূল কারণ হচ্ছে বেকারত্বের সঠিক তথ্যভাণ্ডার নেই।

আরও পড়ুনঃ  একই পাঠ পরিকল্পনায় আড়াইহাজারের ৪৬ ‍স্কুল

জ্ঞান ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক কম্পিউটিং প্রযুক্তিকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, রোবটিকস, আইওটি, ন্যানো প্রযুক্তি, ডেটা সায়েন্সসহ অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে নিয়ে যাচ্ছে অনন্য উচ্চতায়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হচ্ছে রক্তমাংসের মানুষের সঙ্গে ধাতব পদার্থের যন্ত্রের লড়াই। স্বভাবতই এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে মানুষের কর্মবাজারে। অটোমেশন প্রযুক্তির মাঠদখলের ফলে ক্রমেই শিল্পকারখানা হয়ে পড়বে যন্ত্রনির্ভর।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে ড. আইনুল ইসলাম বলেন, রোবটের কারণে চলতি বছরেই বিশ্বজুড়ে সাড়ে সাত কোটি মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। আর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, আগামী দুই দশকের মধ্যে মানবজাতির ৪৭ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। বিশ্বের খ্যাতনামা ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে তাদের লাখ লাখ কর্মী ছাঁটাই করে রোবটকে কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। গত বছরগুলোয় চীনের কারখানাগুলোয় রোবট ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণে।

শিল্পকারখানায় কী ধরনের জ্ঞান ও দক্ষতা লাগবে সে বিষয়ে বাংলাদেশের শিক্ষাক্রমের সমন্বয় নেই বলে উল্লেখ করে ড. আইনুল বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে শিক্ষাব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজাতে হবে। প্রাথমিক পাঠ্যক্রম থেকেই তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয় বাধ্যতামূলক করতে হবে। ইংরেজি ভাষা শিক্ষায় জোর দিতে হবে। দেশে দক্ষ লোকবলের সংকটে বিদেশ থেকে বেশি বেতনে তথ্য প্রযুক্তিতে সুদক্ষ জনবল এনে চলছে দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ বহু খাত।

তথ্য উল্লেখ করে ড. আইনুল জানান, দেশের ২১টি খাতে বর্তমানে ৪৪টি দেশের ৩ লাখ ভিনদেশি নাগরিক কাজ করে যাচ্ছেন প্রযুক্তিজ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে। অথচ তাদের মধ্যে কর দিচ্ছেন মাত্র ৯ হাজার ৫০০ জন। বাকি ২ লাখ ৯০ হাজার ৫০০ অবৈধ। এরা বেতনের নামে দেশ থেকে প্রতিবছর ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পাচার করছেন। যা পদ্মা সেতুর মোট ব্যয়ের প্রায় সমান। ফলে সরকার বছরে রাজস্ব হারাচ্ছে ১২ হাজার কোটি টাকা।

আরও পড়ুনঃ  পরিবেশ দূষণের ‘বিষ’ খাদ্যশস্যে

মার্কিন প্রকৌশলী বাকমিন্সটার ফুলারের নলেজ ডাবলিং কার্ভ তত্ত্ব উল্লেখ করে দৈনিক আনন্দবাজারের বার্তা সম্পাদক নিয়ন মতিয়ুল বলেন, ১৯০০ সাল পর্যন্ত প্রতি একশ বছরে জ্ঞান দ্বিগুণ হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তা কমে ২৫ বছর এবং একবিংশ শতকে এসে জ্ঞানের যে বিস্ফোরণ ঘটেছে তাতে হিউম্যান নলেজ বর্তমানে ১৩ মাসে চক্রবৃদ্ধিহারে দ্বিগুণ হচ্ছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বাস্তবায়ন হলে প্রতি ১২ ঘণ্টাতেই হিউম্যান নলেজ দ্বিগুণ হতে থাকবে। জ্ঞান বিকাশের এই সুনামী সামলাতে বিশ্বব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুরোনো কাঠামো আর ধারণাই বদলে ফেলতে হবে।

শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জনশক্তি তৈরি করতে হবে জানিয়ে নিয়ন মতিয়ুল বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলা করতে হলে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন জনবলের চাহিদার আলোকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন বিভাগ খুলতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে আলাদা উইংও রাখতে হবে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হিসেবে প্রশিক্ষণের জন্য বিভাগ ও ইনস্টিটিউটও খুলতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায় থেকেই দক্ষজনবল তৈরির পরিকল্পনা থাকতে হবে। সেই অনুযায়ীই শিক্ষাকাঠামোকে পুনর্গঠন করতে হবে।

দক্ষ ও দেশপ্রেমী জনশক্তি গড়ে তুলতে ড. মুহাম্মদ কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান শিক্ষা গবেষণাবিষয়ক বেসরকারি সংগঠন মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটসের আহ্বায়ক ফারুক আহমাদ আরিফ। তিনি বলেন, কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনে ১৯৭৪-৮৪ সালের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের কথা বলা থাকলেও গত ৫০ বছরে তা হয়নি। বরং বিভেদ বাড়ানো হয়েছে।

শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে দক্ষ জনশক্তি তৈরির বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার তাগিদ দিয়ে প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, শিক্ষায় দৈন্যতা ঘুচিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বাইরে থেকে তথ্য-প্রযুক্তিবিদ নিয়ে এসে দেশের লোকবলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। ড. আতিউর আরও বলেন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গণিত ও কারিগরি শিক্ষায় আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এদিকে মনোযোগ দিতে হবে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে শিক্ষায় সংশ্লিষ্টদের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন