মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে আদা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন কৃষক আঃ রহিম

আদা চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রতি স্বপ্ন জুড়ে আছে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মোঃ আব্দুর রহিমের। এই প্রত্যাশা আর প্রতিক্ষার প্রহর গুনে গুনে এখন দিন পার করছেন তিনি।

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের সরশপুর গ্রামের মোঃ রোমান উদ্দিনের ছেলে মোঃ আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন অতিবাহিত করে দেশে ফিরেই ভাবতে থাকেন কিছু একটা করার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি দীর্ঘ এক বৎসর উপজেলা কৃষি অফিস কাপাসিয়া থেকে ট্রেনিং গ্রহণ করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় তিনি এবার তিন (৩) বিঘা জমিতে দেশীয় জাতের আদা চাষ করেছেন।

এদিকে কৃষি উদ্যোক্তা মোঃ আব্দুর রহিম দৈনিক আনন্দবাজারকে জানান, আমি পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ নিয়েই আদা চাষ এবং তার সাথে মাছের খামার, হাঁসের খামার, পোল্ট্রি খামার শুরু করি।

তিনি আরো বলেন, তিন বিঘা জমিতে দেশীয় জাতের আদা চাষ করেছি। আমি এখানে প্রায় ১০ মন আদা রোপণ করেছি। যা রোপণ করতে আমার প্রায় ১ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। তার সাথে চাষাবাদ,কীটনাশক এবং শ্রমিক খরচ বাবদ এই পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এদিকে কৃষক আব্দুর রহিম আশা করছেন, যদি আদায় রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম হয় তাহলে সকল উৎপাদণ খরচ বাদ দিয়ে তার প্রায় ৭-৮ লাখ টাকার মতো আয় হবে। ২০২০ সালে স্থানীয় কৃষি অফিসের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব খাত থেকে দেশীয় আদা চাষের প্রদর্শনী গ্রহণ করেন তিনি। আর এই আদা চাষ, মাছ চাষ,পোল্ট্রি খামার, হাঁসের খামারের মাধ্যমেই তিনি একজন সফল উদ্যেক্তা ও স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নের জাল বুনছেন। আদা চাষে সফল হলে তিনি বানিজ্যিক ভাবে এর চাষাবাদ শুরু করবেন বলে জানান।

আরও পড়ুনঃ  পাবনায় ৭২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ

এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বশাক দৈনিক আনন্দবাজারকে জানান, সরকারের একটা প্রকল্প (এসএমই) এর আওতায় যে সকল কৃষকরা আমরা শুধুমাএ তাদের কে বীজ উৎপাদক হিসেবে তৈরী করবো। তারা যাতে বানিজ্যিক ভাবে তাদের উৎপাদিত বীজ বিক্রি ও সরবরাহ করতে পারে সে জন্য আমরা তাদেরকে লাইসেন্স করে দিবো। যাতে করে তারা ব্যবসায়ী ও বীজ উৎপাদক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

তিনি আরো বলেন, যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল কিন্তু ব্যক্তি উদ্যোগে উদ্যোক্তা হতে চায় তাদেরকে আমরা সকল ধরণের সহযোগিতা করবো। অন্যদিকে প্রবাসীদের মধ্য থেকে কেউ যদি উদ্যোক্তা হতে চায় তাহলে তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতা ব্যতিত সকল ধরণের সুবিধা দেওয়া হবে। সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই হচ্ছে কৃষিটাকে বানিজ্যিকিকরণ করা তারই লক্ষ্য হিসেবে আমরা সকল মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার একটা অংশ মাত্র।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওসমান মোঃ সোহেল জানান, যেসব বেকার ভাই ও বোনেরা কৃষি কাজে মাধ্যমে উদ্যোক্তা ও স্বাবলম্বী হতে চায় আমরা তাদেরকে সকল ধরণের কারিগরী সহায়তা, অনলাইনের মাধ্যমে সকল ধরণের সহযোগিতা,বীজ, বালাইনাশক ও সার্বিক সহযোগিতা করবো। যাতে করে প্রবাসী আব্দুর রহিমের মতো সবাই কৃষিতে আত্মনিয়োগ করে অর্থনৈতিক ভাবে নিজেকে ও পরিবারকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারে।

আনন্দবাজার/শাহী/সবুজ

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন