শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে সোনার অলংকার

দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে সোনার অলংকার

দেশের বাজারে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম এক হাজার ১৭৮ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে এক ভরি সোনার অলংকার কিনতে ক্রেতাদের এক লাখ ৩১ হাজার টাকার ওপরে গুনতে হবে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর আগে সোনার অলংকারের এত দাম কখনো হয়নি।

শনিবার (১৮ মে) স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ দাম বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) জানিয়েছে রোববার (১৯ মে) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১২, ৮, ৬ ও ৫ মে চার দফায় সোনার দাম বাড়ানো হয়। ১২ মে প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮৩২ টাকা, ৮ মে ৪ হাজার ৫০২ টাকা, ৬ মে ৭৩৫ টাকা এবং ৫ মে প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ৫০ টাকা বাড়ানো হয়। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে পাঁচ দফায় ভরিতে সোনার দাম বাড়লো ৯ হাজার ২৯৭ টাকা।

এছাড়াও, দাম বাড়ার আগে আট দফায় সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ২৬২ টাকা কমানো হয়। এর মধ্যে ২ মে এক হাজার ৮৭৮ টাকা, ৩০ এপ্রিল ৪২০ টাকা, ২৯ এপ্রিল এক হাজার ১১৫ টাকা, ২৮ এপ্রিল ৩১৫ টাকা, ২৭ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৫ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৪ এপ্রিল দুই হাজার ৯৯ টাকা এবং ২৩ এপ্রিল তিন হাজার ১৩৮ টাকা কমানো হয়।

আরও পড়ুনঃ  সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড -প্রাইস সেনসিটিভ তথ্য

শনিবার বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে নতুন করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ১৭৮ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ১৩১ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৩ হাজার ৮২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৯৫৬ টাকা বাড়িয়ে ৯৬ হাজার ৯১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৯৩ টাকা বাড়িয়ে ৮০ হাজার ১৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয়। সেইসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হবে ন্যূনতম ৬ শতাংশ। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার অলংকার কিনতে ক্রেতাদের এক লাখ ৩১ হাজার ৪৯১ টাকা গুনতে হবে। এত দামে এর আগে দেশের বাজারে সোনার অলংকার বিক্রি হয়নি। সোনার অলংকারের দামে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলেও দেশের বাজারে সোনার দাম এর থেকেও বেশি ছিল। দেশের ইতিহাসে এক ভরি সোনা সর্বোচ্চ এক লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা থেকে ২০ এপ্রিল বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এ দামে সোনা বিক্রি হয়। সে সময় এক ভরি সোনার অলংকারের সর্বনিম্ন দাম এক লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা নির্ধারিত হয়। এছা্ড়াও সোনার দামে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি না হলেও সোনার অলংকারের দামে সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি হওয়ার কারণ মজুরি। আগে ভরিপ্রতি মজুরি ধরা হতো ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। কিন্তু এ নিয়ম পরিবর্তন করে গত ১৪ মে ভরিপ্রতি ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ শতাংশ। এতেই নতুন দামে সোনার অলংকারের ক্ষেত্রে ভরিপ্রতি ন্যূনতম মজুরি দিতে হবে সাত হাজার ১০৮ টাকা।

আরও পড়ুনঃ  সীতাকুণ্ডের আহতদের চিকিৎসায় সাইফের অনুদান

১২ মে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৮৩২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ১৭ হাজার ২৮১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১১ হাজার ৯৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৫০৫ টাকা বাড়িয়ে ৯৫ হাজার ৯৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ২৪৯ টাকা বাড়িয়ে ৭৯ হাজার ৩৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ শনিবার পর্যন্ত এ দামেই সোনা বিক্রি হবে।

প্রসঙ্গত, সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন