শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাসমতী চালে ক্ষতিকর সিসা

বাসমতী চালে ক্ষতিকর সিসা

আমদানিকৃত বাসমতী চালে (কোহিনুরে) মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর সিসার উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) করা এক সমীক্ষায়। আমদানিকৃত এই চালটি ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে বাজারে।

ক্ষতিকর মাত্রায় ভারী ধাতু সিসা রান্না বা সেদ্ধ করলেও রয়ে যায়। এটি ক্যানসার, মস্তিষ্ক, যকৃৎ, কিডনির স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করে। দাঁত ও হাড়ে জমা হয়ে অস্টিওপরোসিস-জাতীয় রোগ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তবে দেশে উৎপাদিত চালে এই ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া যায়নি।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হওয়া ১৩ ধরনের চালের নমুনা পরীক্ষা করে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বিএআরসির পুষ্টি বিভাগের পরিচালক ড. মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এক দল গবেষক।

ড. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশ-বিদেশের অনেক সংস্থা থেকে বাংলাদেশের চালে ভারী ধাতু আছে বলে মন্তব্য করা হয়। এ জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে গবেষণা করে বিষয়টি যাচাই করেছি। আমাদের দেশে উৎপাদিত চালের মধ্যে সামান্য যে ভারী ধাতু পাওয়া গেছে, তা জৈব অবস্থায় রয়েছে, রান্নার পর যা আর অবশিষ্ট থাকে না। কিন্তু আমদানি করা বাসমতী চালে যে পরিমাণ সিসা পাওয়া গেছে, তা মানমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। আর রান্নার পরও তা থেকে যায়। এই সিসা মানুষের জন্য খুবই ক্ষতিকর।’

বিএআরসির গবেষক দলটি বলছে, বাসমতী চালের মধ্যে ক্ষতিকর মাত্রায় সিসা কোথা থেকে এল, প্রাথমিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মাটি, সার, কীটনাশক প্রয়োগ বা চাল প্রক্রিয়াজাত করার সময় ওই সিসা চালের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  চৈত্রে কমবে পেঁয়াজের দাম

বিএআরসি ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, মিরপুর ১, মালিবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট ও বিভিন্ন চেইন শপ থেকে চালের নমুনা সংগ্রহ করে। স্থানীয় ও আমদানি মোট ১৩ ধরনের চালের নমুনার মধ্যে রয়েছে ব্রি ধান-২৮, গুটি, পাইজাম (সেদ্ধ), পাইজাম (আতপ), আমন, মিনিকেট, বাসমতী, বাঁশফুল, নাজিরশাইল, টিলডা (বাসমতী), ফরচুন (বাসমতী), কোহিনুর (বাসমতী) ও বিরুই।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণাটিতে কোনো কোনো নমুনায় চালে আর্সেনিক পাওয়া গেলেও ৯৮ ভাগই পাওয়া গেছে জৈব অবস্থায়, যা খেলে মানুষের কোনো প্রকার স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে না। সংগ্রহ করা নমুনা বিশ্লেষণে একমাত্র আমদানি করা কোহিনুর বাসমতী চাল ছাড়া অন্য কোনো নমুনায় ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। কোহিনুর বাসমতী চালের পরীক্ষাকৃত নমুনায় প্রতি কেজি চালের ক্ষেত্রে শূন্য দশমিক ৪৮ মিলিগ্রাম (পিপিএম) সিসার উপস্থিতি পাওয়া যায়, যা মানবদেহের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ গ্রহণ মাত্রার চেয়ে বেশি। প্রতি কেজি চালের নমুনায় সর্বনিম্ন শনাক্তকরণ মাত্রা শূন্য দশমিক শূন্য ১ মিলিগ্রাম (পিপিএম)।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন