শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ময়মনসিংহে কম চট্টগ্রামে বেশি

বিভাগবিত্তিক শিমের বাজার দর

দেশের তরি-তরকারি তথা সবজির মধ্যে শিমের কদর কোন অংশেই কম নয়। ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের খাবার তালিকায় শিম অন্যতম। সুস্বাদু সবজিটি ভাজি, তরকারি এমনকি লাউশাকের সাথেও ভূজনরসিকদের রসনা মেটায়। দেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে ৬টি বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করে দামের পার্থক্যটি জানা যায়। তবে দামে ব্যবধান থাকলেও খাবারে চাহিদা কোনো অংশেই কম নয়।

চট্টগ্রামে উৎপাদন বেশি হলেও দামে কম নয়। আবার বরিশাল, ময়মনসিংহ বিভাগে প্রায় সমান দাম। রংপুরে কিছুটা পার্থক্য। বিভাগভিত্তিক বিভাজনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে রাজশাহী বিভাগের দামে পার্থক্য ৩০ টাকা। বরিশাল ও ময়মনসিংহের সঙ্গে ৫০ টাকা ব্যবধান।

রাজধানী ঢাকায় শিম বিক্রি হচ্ছে ৭০ হতে ৮০ টাকায়। হাতিরপুল বাজারে কামরুল হাসানের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি বাজার করেছেন লাউশাক, বীচি শিম ও কয়েক জাতের মাছ। জানালেন, লাউশাকের সঙ্গে বীচি শিম তার প্রিয় খাবার। আর এই প্রিয় খাবারটির তরকারি কিনতে দিতে হয়েছে মোটা অঙ্ক। ৮০ টাকা কেজিতে কিনেছেন মোটা শিম। এ দিকে বিক্রেতা রকিবুলের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে তিন ধরনের শিম বাজারে চলে। একটি বীচি শিম, শিসামতি বা মোটা অপরটি সাধারণ। বীচি শিমটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনা হয়। বাকিগুলো নরসিংদী জেলা থেকে।
রাজশাহীতে শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে।

রাজশাহী সদরের ইলিয়াস আরাফাত জানান, অঞ্চলটিতে কয়েক ধরনের শিম পাওয়া যায়। তারমধ্যে প্রধানত দুটি ধরনের শিম সকলের প্রিয়। একটি হচ্ছে তরকারি জাতীয়। অপরটি বীচি শিম, এটি মূল লাউশাকসহ বিভিন্ন ধরনের খাবারে বেশি ব্যবহার হয়। স্বাভাবিক শিম ৪০ টাকা ও বীচি শিম ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নাজমুল হক নাহিদ জানান, তার অঞ্চলে ৩০ হতে ৩৫ টাকার মধ্যে এই দুই প্রকারের শিম পাওয়া যায়। এটি তরকারি হিসেবে সুস্বাদুর তালিকায় শীর্ষে।

আরও পড়ুনঃ  বিশ্বব্যাপী জ্বালানী তেলের বাজারে মন্দা

রংপুর বিভাগের দিনাজপুরের হিলি উপজেলার মাসুদুল হক রুবেল জানান, হিলিতে শিম ৩০ হতে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখানে বীচি শিম ৪০ টাকা ও সাধারণটি ৩০টাকায় বিক্রি হয়। রাজশাহীর বিভিন্ন জেলার শিম পাইকাররা দিনাজপুরে বিক্রি করে থাকে।

বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার মিজানুর রহমান নাদিম জানান, তালতলীতে এখন আর বাড়ি বাড়িতে শিমের মাচা দেখা যায় না। বেশিরভাগই বাণিজ্যিক চাষে পরিণত হয়েছে। ফলে কেনা শিমই গৃহাস্থলীর উৎস। তবে নিজেদের মাচায় না হলেও দামটা অনেকটাই কম। সেখানে সাধারন শিমটি ২০ টাকা ও বীচি শিমের বিক্রি ৩০ টাকায়। তবে আরেকটি ধরনের শিম হচ্ছে মোটা। তার কদর এলাকাটিতে বেশি। দাম ৩৫ টাকার মতো। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালি উপজেলার সাঈদ খান জানান, অঞ্চলটিতে বাহির থেকেই কিনে খেতে হয় শিম। তবে বাজার দর কম ১৫ হতে ২০ টাকার মধ্যে। কিছু মানুষ নিজেদের খাবারের জন্য বাড়ির আঙিনায় রোপন করে। তবে বেশিরভাগই কিনে খায়।

ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার আনিস জানান, এখানে শিমের বাজার ভালো। নিজেরা চাষের সঙ্গে জড়িত। বাড়ির মাচায় উৎপাদন করা শিমই বেশি খায়। আবার বাণিজ্যিক চাষও ভালো হয়। ২০ হতে ২৫ টাকা কেজি। বীচি শিম ৩০ টাকা কেজি।

চট্টগ্রাম সদরের মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, বীচি শিমকে আঞ্চলিক ভাষায় খাইট্টা বলা হয়। এটির সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্যগুলো ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। চট্টগ্রামে শিমের আবাদ বেশি হলেও দামও বেশি নয়। তিনি বলেন, সীতাকুণ্ডে শিম চাষের জন্য বিখ্যাত। শত কোটি টাকা মূল্যের বেশি শিম উৎপাদন হয়ে থাকে এখানে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন