শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উৎপাদন ব্যয় বাড়ার প্রভাব ইস্পাতের বাজারে

উৎপাদন ব্যয় বাড়ার প্রভাব ইস্পাতের বাজারে
  • আগামী বছরেও থাকবে ঊর্ধ্বমুখী
  • বৈশ্বিক উৎপাদনে সর্বোচ্চ রেকর্ড হবে
  • বহু প্রতিষ্ঠানের রেকর্ড মুনাফা অর্জন
  • ওমিক্রনে সরবরাহ চেইনে সংকট বাড়বে

গেল কয়েক মাস ধরে ক্রেতারা তাদের ইস্পাত কেনার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করছেন। তবে আসছে বছরে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণপ্রবাহ, মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধি চলমান সরবরাহ চেইনে সংকট, বাণিজ্যিক কার্যক্রমে অব্যাহতভাবে বিঘ্ন ঘটাবে। ২০২২ সালে স্টেইনলেস ইস্পাতের চাহিদা ও দাম নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান মেপসের করা শর্ট-টার্ম আউটলুক শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দুই ধরনের মত লক্ষ করা গেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বৈশ্বিক স্টেইনলেস ইস্পাত খাতের জন্য চলতি ২০২১ সাল ছিল একটু ব্যতিক্রমী। এ সময় বেশির ভাগ কোম্পানি সরবরাহ চেইনের মাধ্যমে বড় রকমের আর্থিক সুফল পেয়েছে। নানামুখী সংকটের প্রভাবে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলেও ঊর্ধ্বমুখী বিক্রয়মূল্যের সুবিধা নিয়ে লাভবান হয়েছেন ইস্পাত উৎপাদকরা। এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানই রেকর্ড মুনাফা অর্জন করেছে। টানা কয়েক প্রান্তিক ধরেই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। তবে বছরের শেষ দিকে এসে বাজার পরিস্থিতি কিছুটা মন্থর হয়ে পড়ে। যদিও বেশির ভাগ বাজার অংশীজন আগামী বছর আবারো বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি বছরের শেষ মাসে এসে দেখা গেছে, বিশ্বের প্রত্যেক অঞ্চলেই স্টেইনলেস ইস্পাতের দাম ঊর্ধ্বমুখী পর্যায়ে অবস্থান করছে। ৩০৪ কোল্ড রোলড কয়েলের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে এসেছে। আগামী বছর কয়েলজাতীয় পণ্যের দাম আরো বড় পরিসরে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মৌসুমি চাহিদা কমে যাওয়ায় এশিয়ার দেশগুলোয় স্টেইনলেস ইস্পাতের দাম কমার প্রত্যাশা করেছিলেন বাজার বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুনঃ  পেঁয়াজের কেজি ২৩০ টাকা

তবে উৎপাদন ব্যয়ের ঊর্ধ্বমুখিতা এতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে সরবরাহেও বিঘ্ন ঘটতে পারে। তবে উত্তর আমেরিকার দেশগুলোয় ইস্পাত কেনাবেচা কিছুটা মন্থর হয়ে পড়ায় আগামী বছরের প্রথমার্ধে দাম কিছুটা কমতে পারে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে ইউরোপের দেশগুলোয় সরবরাহ সংকটের কারণে কোল্ড রোলড কয়েল, শিটসহ অন্যান্য ফ্ল্যাট পণ্যের দাম নতুন বছরের শুরুতে ঊর্ধ্বমুখীই থাকবে। স্টেইনলেস স্টিলের বৈশ্বিক বাজারে দ্রুত প্রসার ঘটছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ধাতুটির উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। চলতি ও আগামী বছর প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

চীন বিশ্বের শীর্ষ উৎপাদক হওয়া সত্ত্বেও নীতিনির্ধারকরা বিধিনিষেধ আরোপ করায় দেশটির উৎপাদন বাধার মুখে পড়েছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে শিল্প ধাতুটির উৎপাদন বাড়ছে। আগামী বছর স্টেইনলেস স্টিলের বৈশ্বিক উৎপাদন ৫ কোটি ৮২ লাখ টনে উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস মিলেছে, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ। পূর্বাভাস সত্য হলে উৎপাদন চলতি বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে।

মেপস আরো জানায়, চলতি বছর স্টেইনলেস স্টিলের বৈশ্বিক উৎপাদন ৫ কোটি ৬৮ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। গত বছরের তুলনায় উৎপাদন বাড়বে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা রাখবে ইন্দোনেশিয়া।

আনন্দবাজার/এজে

সংবাদটি শেয়ার করুন