শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আধুনিকতার ছোঁয়ায় কনটেইনারের বদল

আধুনিকতার ছোঁয়ায় কনটেইনারের বদল
  • সাগরপথেই পরিবহন ৯০ ভাগ পণ্য
  • করোনায় বেড়েছে কনটেইনারের চাহিদা
  • বেড়েছে পরিবহনে ব্যয়, পণ্যের দাম

প্রতিবছর প্রায় ১৪ লাখ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য পরিবহন করা হয় বড় বড় ধাতব কনটেইনারে। কনটেইনার ছাড়া পণ্য পরিবহন ভাবনাতেই আনা যায় না। নৌ বা সাগরপথে পণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রে অপরিহার্য এই কনটেইনারের চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। বলা যায়, পণ্য পরিবহনে সবচেয়ে সহজ আর সুলভ হয়ে উঠছে কনটেইনার। গুরুত্ব বিবেচনায় দিন দিন আকার আর ডিজাইনে বদলে যাচ্ছে কনটেইনার। বর্তমানে আধুনিকায়নের ছোঁয়া লেগে প্রতিনিয়তই পাল্টে যাচ্ছে গোটা বিশ্বের পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা। পণ্য পরিবহনেও আসছে বহুমুখী পরিবর্তন।

আমরা নিত্যদিন যেসব পণ্য ব্যবহার করছি তার বড় একটি অংশ সমুদ্রপথে পরিবহন হয়। কারণ এসব পন্যের বেশিরভাগই আমদানি করা। যা বিদেশ থেকে সমুদ্রপথে আনা হয়। পরিসংখ্যান বলছে বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ পণ্যই সমুদ্রপথে পরিবহন করা হয়। এসব জিনিস বড় কনটেইনারে ভরে পণ্যবাহী জাহাজে তোলা হয়। মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সমরাস্ত্র পরিবহনের জন্য মার্কিন সেনাবাহিনী কনটেইনার পরিবহন শুরু করে। তবে সেই কনটেইনার ছিল আকারে ছোট। ১৯৫০-এর দশকের শুরুতে মার্কিন ব্যবসায়ী ম্যালকম ম্যাকলিন বুঝতে পারেন, প্রমাণ আকারের কনটেইনার তৈরি করা গেলে জাহাজ বা ট্রেনে কনটেইনার ওঠানো-নামানো অনেক সহজ হবে। এই পদ্ধতিতে পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে সরবরাহ পর্যন্ত পুরো সময় কনটেইনারে রাখা যায়। এতে খরচ অনেকটাই কমে যায়- ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকিও কমে আসে।

আরও পড়ুনঃ  করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪২ হাজার ছাড়িয়েছে

কনটেইনারবাহী জাহাজের দৈর্ঘ্যও গত ২০ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। এখন বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজের ধারণক্ষমতা ২৪ হাজার কনটেইনার। অন্য কথায়, মালগাড়ি বা কনটেইনারবাহী ট্রেনের দৈর্ঘ্য ৪৪ মাইল হলেই কেবল এতো পরিমাণ কনটেইনার পরিবহন করা সম্ভব। আরেক হিসাবে দেখা যায়, ২০ ফুট আকৃতির ১৯ হাজার ১০০ কনটেইনার পরিবহনে সক্ষম একটি জাহাজ ১৫ কোটি ৬০ লাখ জোড়া জুতা, ৩০ কোটি ট্যাবলেট কম্পিউটার, ৯০ কোটি ক্যান বিন পরিবহন করতে সক্ষম।

তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো খরচ, ২০ টনের একটি কনটেইনার ইউরোপ থেকে এশিয়ায় পাঠানোর খরচ একই পথে ইকোনমি ক্লাসের একটি বিমান টিকিটের সমান। এটা অবশ্য মহামারির আগের হিসাব। মহামারির মধ্যে নানা সংকটের কারণে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে গেছে। বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির কারণ হিসেবে কনটেইনারের ভাড়া বৃদ্ধিকে দায়ী করা হচ্ছে। অন্যদিকে কনটেইনারের সংকটও দেখা দিয়েছে সাম্প্রতিক। এতে পণ্য পরিবহন যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি আমদানি করা পণ্যের দামও বেড়ে গেছে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন