শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাটা শাক বেচে লাখপতি

ডাটা শাক বেচে লাখপতি

সবজি হিসেবে ডাটা শাক বেশ জনপ্রিয়। শুধু পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য একসময় বাড়ির আঙিনায় চাষ করা হতো শাক-সবজিটি। চলতি বছর উপজেলা কৃষি অফিসের প্রেরণায় কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চরপুক্ষিয়া গ্রামে ডাটা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন যুবক আবুল কালাম। বিএ পাশ করার পর চাকরি না পেয়ে কৃষি কাজে নেমে পড়েন আবুল কালাম। বছরের পর বছর পড়ে থাকা জমিতে ডাটাশাক চাষে তার জীবনে এসেছে অথনৈতিক নতুন গতি।

জানা যায়, নিজের আত্মতৃপ্তি আর ভালো লাগা থেকেই নিজের জমিতে প্রথমে পেঁপে চাষবাদ করেন কালাম। পরের বছর পেঁপে চাষে সফলতা পেয়ে লেবুর আবাদ শুরু করেন। পরবর্তীতে ভালো মানের পেঁপে বীজ সংগ্রহ এবং চারা উৎপাদন করেন। পেঁপে চাষে আসে সাফল্য। সেই প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে সাবেক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সার্বিকভাবে সহযোগিতা ফলদ ও বৃক্ষে সারাদেশে প্রথম স্থান অর্জন করেন। চলতি বছর ডাটাশাক চাষে আবুল কালামের এ সাফল্যের পিছনে কটিয়াদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আলতাব হোসেন সার্বিকভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে আসছেন।

কটিয়াদী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগেও কটিয়াদী উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর সভায় ডাটাশাক তেমন একটা চাষ হতো না। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে জমিতে অর্থাৎ পাঁচ বছরে ডাটাশাক চাষ দ্বিগুণ হয়েছে।

ডাটাশাক চাষি আবুল কালাম জানান, বাবার জমি থাকায় নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পেশা হিসেবে কৃষি কাজকেই বেছে নেই এবং মনোযোগী হয়ে পড়ি। প্রতিবছর একটার পর একটা সফলতার মুখ দেখে চলতি বছর ৬ বিঘা জমিতে ডাটাশাক চাষ করি। চাষ করতে জমি তৈরি, সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মুজরি সব কিছু মিলে খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। আর ডাটাশাক ৪ লাখ টাকা বিক্রি করি। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ডাটা চাষ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল আমি। ডাটাশাকের পাশাপাশি জমিতে বিভিন্ন সবজির আবাদ করছি। একটি গবাদি পশুর খামার রয়েছে। পাশাপাশি পেঁপে, লেবু, কলাসহ আরও অন্যান্য সব ধরনের বাগান রয়েছে। যা আমি পর্যায়ক্রমে মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরব। ডাটা চাষে আমার সাফল্য দেখে আশপাশের অনেকে কৃষিকাজ করতে উৎসাহিত হচ্ছে। আগামীতে আরও বেশি জমি নিয়ে বিভিন্ন সবজির চাষ করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আরও পড়ুনঃ  বাম্পার ফলনেও শঙ্কায় কৃষকেরা

শ্রমিকরা বলেন, কৃষক আবুল কালামের বিভিন্ন বাগানে কীটনাশক, সার, জমির আগাছা পরিষ্কারের কাজ করে আসছি। এখানে কাজ করে মুজরি হিসেবে পাই, যে টাকা মুজরি পাই, তা দিয়ে সংসার চালাই। ডাটাশাক চাষ করে আমাগো মালিক আবুল কালাম ভাই বেশ ভালো আছেন।
কটিয়াদী উপজেলা কৃষি অফিসার মুকশেদুল হক বলেন, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কটিয়াদী উপজেলার উৎপাদিত শাকসবজির বেশি চাহিদা রয়েছে। আর সবজি উৎপাদনে এ উপজেলার বেশ সুনামও রয়েছে। অনেক কৃষক শাকসবজি ভালো চাষে বেশ সফল হয়েছে। ডাটা চাষে সফল কৃষকদের মধ্যে অন্যতম হলেন আবুল কালাম। তিনি ডাটা চাষ করে নিজের ভাগ্য বদলেছেন। তাকে দেখে উপজেলার অনেকে এখন ডাটা চাষে ঝুঁকছে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন