শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রচন্ড ঠান্ডা আর কুয়াশায় পচে যাচ্ছে শুটকি

লোকসানে দুবলার চরের জেলে ও মৎস্যজীবীরা

সম্প্রতি শীতের বেপোরোয়া কান্ডে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন জেলে ও মৎস্যজীবীরা। বঙ্গোপসাগর পাড়ের সুন্দরবনের দুবলার চরে মৎস্যজীবীরা প্রতিবছরেই মৎস্য সংগ্রহ ও শুটকি প্রক্রিয়াকরণ করে থাকেন। এবার ডিসেম্বরের বৃষ্টি আর কুয়াশায় ঝাপসা করে দিল জেলে ও মৎস্যজীবীদের সব আশা ও আকাঙ্খা।

রোদ্রের অভাবে সাগর থেকে সংগৃহিত অনেক মাছ শুকাতে না পারায় তা পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে গুনতে হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ লোকসান। এদিকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের কাজও।

অন্যদিকে প্রচণ্ড ঠান্ডা, কুয়াশা আর বৈরী আবহাওয়ায় জেলেরা সাগর থেকে ট্রলার নিয়ে সুন্দরবন উপকূলে ফিরে এসেছেন। অমাবশ্যার ভরা গোনে এসব জেলে এখন দুবলার চর ও সুন্দরবনের আশপাশের এলাকায় অলস সময় পার করছেন।

৭ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশসহ সব ধরনের মৎস্য সংগ্রহ নিষিদ্ধ থাকায় এবার ৩০ অক্টোবর (রাত) ও ৩১ অক্টোবর (ভোর) থেকেই শুরু হয় সামুদ্রিক মৎস্য সংগ্রহ ও শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের মৌসুম।

আরও পড়ুন: বাণিজ্যিকভাবে বেড়েছে পঞ্চগড়ে ফুলের চাষ

মৎস্যজীবীদের বৃহৎ সংগঠন দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিককালে বৃষ্টি, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর বৈরী আবহাওয়ার কারণে অধিকাংশ জেলে গভীর সমুদ্র থেকে মাছ না ধরে দুবলার চর এলাকায় চলে এসেছে। এছাড়া রোদের অভাবে মাছ শুকানো না যাওয়ায় তা পচে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডায় জেলে ও মৎস্যজীবীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। করছেন মানবেতর জীবনযাপন। গত কয়েক দিনের বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ খাতে অন্তত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  পণ্যমূল্য সমন্বয়ে আসতে পারে আলাদা বিভাগ 

দুবলার চর এলাকার মোংলার মৎস্যজীবী জালাল উদ্দিন আহম্মেদ বুলবুল জানান, জেলে ও মৎস্যজীবীরা ঋণ করে সাগরে মাছ আহরণ ও শুঁটকি প্রক্রিয়ায় এসেছে। এভাবে দুর্যোগ অব্যাহত থাকলে কি করে তাদের ঋণ শোধ করবেন, তা নিয়ে হতাশায় ভুগছেন।

সুন্দরবনের দুবলার চর জেলে পল্লির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্ট রেঞ্জার অসিত কুমার রায় বলেন, আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত মোংলা, রামপাল, খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী ও বরিশালসহ সুন্দরবন উপকূলের কয়েক হাজার জেলে মাছ আহরণ ও শুঁটকি তৈরির জন্য সাগর পাড়ে অস্থায়ী বসতি গড়ে তুলেছেন। এছাড়া বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জেলে ও মৎস্যজীবীরাও এসেছেন এই চরে। ইতিমধ্যে উপকূলের হাজার হাজার জেলে ও মৎস্যজীবী দুবলার চর এলাকায় মাছ আহরণ ও শুঁটকি তৈরির কাজে যোগ দিয়ে দুই দফায় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

আনন্দবাজার/ইউএসএস

সংবাদটি শেয়ার করুন