শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সয়াবিন-পামতেল-

বিশ্বে বাড়লে লম্ফঝম্ফ কমলে ‘বধির’

ভোজ্যতেলের

সয়াবিন ও পামতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে আরও কমলেও দেশীয় বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি এখনও। অথচ বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কোনো গুজব ছড়ালেও দেশের বাজারে লাফিয়ে ওঠে ভোজ্যতেলের দাম। ব্যবসায়ীরা বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে গলা চড়িয়ে দেন। এখন বিশ্ববাজারে কমলেও তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।

সূত্রমতে, গত এক মাসের ব্যবধানে শুধুমাত্র পাম তেলের মণপ্রতি বুকিং কমেছে এক হাজার মালয়েশিয়ান রিংগিত। অপরদিকে সয়াবিনের মণপ্রতি বুকিং কমেছে ২৫০ ডলারের মতো। মালয়েশিয়া সরকার পাততেলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরই বিশ্ববাজারে দাম পড়তে থাকে। একইভাবে বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম কমতে শুরু করলেও দেশের বাজারে কোনো প্রভাব নেই।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজার কমলেও দেশের বাজারে প্রভাব পড়তে একটু সময় লাগবে। কারণ এখন যেসব তেল মজুদ আছে সেগুলো বেশি দরে কেনা। তাই এখনো বাজার চড়া। তবে কতদিন লাগবে দাম কমতে সে ব্যাপারে তেমন কিছু বলতে পারছেন না তারা।

এদিকে, চট্টগ্রামের বনেদি পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক মাস আগে পাম তেলের বুকিং দর ছিল ৬ হাজার রিংগিত। বর্তমানে সেটি নেমেছে ৫ হাজারে। এছাড়া সয়াবিন তেলের বুকিং দর ২৫০ ডলার কমে এখন নেমে এসেছে ১ হাজার ৬০০ ডলারে। এর প্রভাবে যেভাবে স্থানীয় বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমার কথা থাকলেও সেভাবে কমেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে খাতুনগঞ্জে প্রতি মণ (৩৭.৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ২০০ টাকায়। এছাড়া সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৭ হাজার টাকায়।

আরও পড়ুনঃ  পাইকারিতে বেড়েছে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম

খাতুনগঞ্জের তেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের দেশে পাম তেল আসে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে। অপরদিকে সয়াবিন আসে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে। বর্তমানে দেশগুলোতে ফসল উৎপাদনের মৌসুম চলছে। যার কারণে পাম ও সয়াবিন তেলের সরবরাহও বেড়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজার কমছে। তবে আমাদের দেশে সরকার ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে দেয়ায় আন্তর্জাতিক বাজার কমার কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী আবু বক্কর বলেন, পাম তেল ও সয়াবিন তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার কমতে শুরু করেছে। সামনে আরো কমবে। এখন এলে পাম ও সয়াবিনের উৎপাদনের মৌসুম। তবে আমাদের দেশের সরকার দাম নির্ধারণ করে দেয়ায় দাম এক প্রকার স্থিতিশীল রয়েছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর জন্য সবসময় আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেন। অথচ এখন আন্তর্জাতিক বাজার অনেক কম, কিন্তু ব্যবসায়ীরা এখনো অধিক মুনাফায় ব্যস্ত। এবার দোহাই দিচ্ছে সরকারের। সরকারের কাছে আমরা অনুরোধ জানাবো যাতে তেলের বাজার যথাযথভাবে মনিটরিং করা হয়।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন