চলনবিলের বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কেই বসেছে তরমুজ-বাঙ্গির হাট। এ সড়কের পাশে শ’খানেক চাষিকে বাঙ্গি নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। আবার পাইকারি ক্রেতারাও রাস্তাাতেই ট্রাক ভিড়িয়ে তরমুজ বাঙ্গি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
গতকাল বুধবার সকালে হাট ছাড়াই পথের ধারে তরমুজ, বাঙ্গি, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া বিক্রির এ দৃশ্য দেখা যায়। এলাকাটি নাটোরের বড়াইগ্রামের সদর ও গুরুদাসপুর ধারাবারিষা ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে। বড়াইগ্রাম কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, বড়াইগ্রামে একশ হেক্টর বাঙ্গি ও ৫০০ হেক্টর তরমুজ চাষ হয়েছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় চাষিরা রসুনের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি ও তরমুজ চাষ করে থাকেন। বলা যায়, বাঙ্গি ও তরমুজ বিনামূল্যেই পাওয়া যায়। প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০ থেকে ৪০ মেট্রিক টন বাঙ্গি হয়। এপ্রিলের প্রথম থেকে বাঙ্গি উঠতে শুরু করেছে। আগামী মে মাসের শেষ দিক বাঙ্গি ও তরমুজ উঠবে।
বড়াইগ্রাম কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, গুরুদাসপুর উপজেলায় ৭৯০ হেক্টোর ও ৭৬০ হেক্টোর জমিতে তরমুজ-বাঙ্গি চাষ হয়েছে। যে এলাকায় বেশি পরিমাণে চাষিরা রাস্তার ধারে বাঙ্গি স্তুপ করে রেখেছেন, সেটি গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের সিধুলি মৌজার ও বড়াইগ্রামের উপজেলার মাড়িয়া মৌজার মধ্যে পড়েছে। গুরুদাসপুরের নয়াবাজার থেকে বড়াইগ্রামের মানিকপুর বাজার প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে বাঙ্গি-তরমুজ নিয়ে চাষিদের বসে থাকতে দেখা যায়।
গত শুক্রবার সন্ধ্যার বাজিতপুর গ্রামের রেজাউল করিম রাস্তার ধারে তরমুজ নিয়ে বসে ছিলেন। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তাঁর দেড় বিঘা জমিতে তরমুজ ছিল। সেখানে ওজন করে তরমুজ বিক্রি হয় না।
রেজাউল করিম বলেন, ১৬ হাজার টাকা’শ হিসাবে তিনি পাইকারি দরে তরমুজ বিক্রি করছেন। একটা তরমুজ বাজারে নিয়ে গেলে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা করে বিক্রি হবে।
তিনি বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় তরমুজ এবার মিষ্টি হয়েছে। এ জন্য ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। একই গ্রামের আমজাদ আলী তিন বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তিনিও পাইকারি ১৬ হাজার টাকা শ হিসাবে তরমুজ বিক্রি করছেন।
একই গ্রামের চাষি মধু প্রামানিক এক বিঘা জমিতে রসুনের সঙ্গে বাঙ্গি করেছেন। তিনি বলেন, তাঁর জমিটা এক বছরের জন্য তিনি ১৫ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন। এ জমি থেকে রসুন তুলেছেন। আর বাঙ্গি থেকে আবহাওয়া ভালো থাকলে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, বাঙ্গিটা দিয়ে জমির ইজারামূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। এটাই বাড়তি লাভ। তাঁরা দেশি জাতের গোল বাঙ্গি চাষ করেন। এই জাতের একটা বাঙ্গি তিন থেকে পাঁচ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়।