নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবছরই ভুট্টার চাষ হয়। চলতি মৌসুমে এ উপজেলার ভুট্টাচাষিরা দামে খুশি হলেও ফলনে বেজার। অসময়ের বন্যা আর বৈরী আবহাওয়ায় প্রতিটি গাছেই ভুট্টার দানা পরিপক্বতার আগেই হেলে পড়েছে মোচা। ফলে বিঘা প্রতি ফলন কম হয়েছে ১০ থেকে ১৫ মণ বলে জানান কৃষকরা। এতে ভুট্টার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকা ও পোকার আক্রমণ হওয়ায় এ ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ভুট্টার ভালো দাম হওয়ায় এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারছেন তারা।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় এবার ১৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টাচাষ হয়েছে। বিশেষ করে নদীর চরগুলোতে ভুট্টার চাষ বেশি হয়েছে।
চরাঞ্চলের বেশ কিছু ভুট্টাক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, ভুট্টাকাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকরা। তারা জানান, এবার ভুট্টার ফলন ছিল বাম্পার। তবে বৈরী আবহাওয়ায় পানি জমে ভুট্টার গাছ পঁচনসহ পোকা ধরেছে। শেষ সময়ে ভুট্টার রোগ সব স্বপ্ন ম্লান করে দিয়েছে। তবে এবার ভুট্টার ফলন কম হলেও দামে খুশি চাষিরা। বর্তমানে প্রতিমণ ভুট্টা ১১শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ভেন্ডাবাড়ির ফরেস্টের চর এলাকার ভুট্টাচাষি আফজাল হোসেন (৬০) জানান, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ধারদেনা করে ১৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভুট্টার মোচায় আসেনি পরিপূর্ণ দানা। এতে গত বছরের তুলনায় বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১৫ মণ ফলন কম হয়েছে। এ অবস্থায় তাঁর মাথায় হাত পড়েছে। তবে স্বস্তি ফিরেছে ভুট্টার দামে। গতবারের তুলনায় বিঘা প্রতি ফলন কম হলেও দাম বেড়েছে মণ প্রতি ৫ থেকে ৭০০ টাকা। দাম বেশি থাকায় ক্ষতি না হলেও লাভ বেশি। হবে না বলেন তিনি।
ভেন্ডাবাড়ি চর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ভুট্টাচাষি জাহিদুল জানান, জমির মালিকের কাছ থেকে প্রতি বিঘা সাড়ে চার হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে তিনি এবার ছয় বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। ভুট্টার মোচায় পরিপূর্ণ দানা না আশায় ফলন অনেক কম হয়েছে। ভুট্টা চাষে যা খরচ করেছেন, তা ঋণের টাকায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলি জানান, বৈরি আবহাওয়া আর একই জমিতে বারবার একি ফসল আবাদ করায় এবার ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তবে ভুট্টার বাজার দর বেশি থাকায় লাভের মুখ দেখবেন কৃষকরা বলে জানান তিনি।