শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একমণ পেঁয়াজে এক কেজি ইলিশ!

একমণ পেঁয়াজে এক কেজি ইলিশ!

পেঁয়াজের রাজধানীতে মাথায় হাত

পাট-পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত ফরিদপুরের সালথা উপজেলা। এখানে তুলনামূলক সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। চলতি পেঁয়াজ মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। উঠতে শুরু করেছে নতুন হালি পেঁয়াজ। বেড়েছে প্রতিটি কৃষকের বাড়িতেই পেঁয়াজ নিয়ে ব্যস্ততা। তবে গত মৌসুমের চেয়ে ফলন বেশি হলেও দাম তুলনামূলক কম থাকায় শঙ্কায় উপজেলার পেঁয়াজ চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস ও কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, চলতি পেঁয়াজ মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে অতি বৃষ্টির কারণে নিচু জমিতে পানি জমে যাওয়ায় হালি পেঁয়াজ আবাদে কিছুটা বিলম্ব হয় এবং বিলম্ব হওয়ার কারণে উদপাদন তুলনামূলক কিছটা কম  হয়েছে।

গত কয়েকদিনের পেঁয়াজের দাম রকম ভেদে ৭শ টাকা থেকে ৮শ টাকা পর্যন্ত। যেখানে একমণ পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ ৮শ থেকে ১২শ টাকা। একমণ পেঁয়াজে বর্তমান মূল্যে এক কেজি ইলিশ পাওয়া অনেকটা কষ্টকর। মৌসুমের শুরুতে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমতে পারে সেক্ষেত্রে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারাবে পেঁয়াজ চাষিরা।

মাঠ সালথা এলাকার পেঁয়াজচাষি খলিল মোল্যা বলেন, গতবছর আমাদের প্রতি শতকে ফলন হয়েছে প্রায় দেড় থেতে ৩ মণ। এবছর বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের চারা দেরিতে রোপণ করায় ফলন কিছুটা কম হয়েছে। আবার কিছু জমিতে ফলন আরও কম হয়েছে। প্রতি শতকে যা খরচ হয়েছে তার চেয়ে উৎপাদন কম হয়েছে। সেই সাথে শুরুতেই পেঁয়াজের দাম কম হওয়ায় আমাদের পথে বসার মতো অবস্থা।

আরও পড়ুনঃ  নৌপথে বাড়ছে বাণিজ্য

পেঁয়াজচাষি জুয়েল মোল্যা বলেন, অনেকেই সুদ ও লোন করে পেঁয়াজ চাষ করেছেন এবং জমি বন্ধক ও ধারও করেছেন কেউ কেউ। তবে পেঁয়াজের ফলন কিছুটা ভালো হলেও বাজারে দাম কম হওয়ায় পেঁয়াজ চাষিদের অবস্থা খারাপ। তা ছাড়া এবছর চৈতালী ফসলও ফলন কম হয়েছে। সবমিলে কৃষকের আর চাষাবাদ করার মতো অবস্থা নেই।

সালথা সদর বাজারের একজন পেঁয়াজ ব্যবসায়ী এরশাদ জানান, গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজ ক্রয় করে প্রায় ১ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। আমরা যে দামে ক্রয় করি মোকামে সেই দামে বিক্রি করতে পারি না। ফলে লোকসান হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জীবাংশু দাস দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে কিছু জমিতে নাবীতে অধিক বয়সের চারা রোপণ করা হয়েছে, ফলে উৎপাদনের উপর সামান্য বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তবে পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য পেলে কৃষকেরা লাভবান হবে এবং পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন