শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাংকখাতকে চাঙা রাখার উদ্যোগ

ব্যাংকখাতকে চাঙা রাখার উদ্যোগ

এমনিতেই করোনা মহামারির কারণে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত অনেকটা নড়ে গেছে। তার ওপর দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম আর অবস্থাপনায় ব্যাংকিং বা আর্থিকখাতে নেতিবাচক ধারা তৈরি হয়েছে। করোনার প্রকোপ কিছুটা শিথিল হওয়ায় যখন সব খাত ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে তখন আর্থিকখাতে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম দূর করার উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের কিছু ব্যাংকের পারিপার্শ্বিক অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। ফলে অর্থনীতিতে যাতে বড় কোনো ধাক্কা না লাগে এজন্য আগে থেকেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম সহজেই তুলে আনা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা আনার জন্যও উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

কেন্দ্রীয় বা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এমনিতেই কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিতে আছে। সেজন্য তদারকি আরও জোরদার করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সভায় অনিয়মের তথ্য তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, ব্যাংকিক সেক্টরে নতুন এ আইনে ভালো কোনো কিছু হবে। ফলে অনিয়ম হলে সহজেই ধরা যাবে।

মূলত, দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিবছর পরিদর্শন করে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে সে ব্যাপারে পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তবে এখন থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক পরিদর্শন প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের বিশেষ সভা করতে হবে। ওই সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বাজার বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকের একমাত্র আলোচ্যসূচি হবে বার্ষিক পরিদর্শন প্রতিবেদনের নির্দেশনা পরিপালন। পাশাপাশি ওই সভায় অনিয়ম, ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো উপস্থাপন করতে হবে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

আরও পড়ুনঃ  নতুন বাজেটের আকার হবে ৮ লাখ কোটি টাকা: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিশদ পরিদর্শন প্রতিবেদন পাঠানোর দুই মাসের মধ্যে বিশেষ পর্ষদ সভা আহ্বান করতে হবে। পর্ষদ সভায় আবশ্যিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বা উপমহাব্যবস্থাপক, পরিদর্শন দল এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের একজন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।

প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, সভার কার্যবিবরণী সভাপরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগে পাঠাতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে পরিচালনা পর্ষদের বর্ণিত বিশেষ সভা অনুষ্ঠানের কমপক্ষে ১০ কার্যদিবস পূর্বের বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া পরিদর্শন প্রতিবেদনের উল্লিখিত অনিয়ম, ত্রুটি-বিচ্যুতি সমাধানের অগ্রগতি পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করতে হবে। প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩ এর ১৮ (ছ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন