শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে তিনমাসেই নতুন কোটিপতি ১৬২১

দেশে তিনমাসেই নতুন কোটিপতি ১৬২১

বিশ্ব বাজারের পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ফলে দেশের মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতিতেও ২০২২ সালের প্রথম তিন মাসে কোটি টাকার বেশি আমানতকারী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৬২১টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমানে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ১,০৩,৫৯৭, যা ২০২১ সালের ডিসেম্বরের শেষে এ সংখ্যা ছিল ১,০১,৯৭৬।

২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাস প্রকোপ শুরুর সময় দেশের ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার বেশি থাকা অ্যাকাউন্টের (ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান) সংখ্যা ছিল ৮২,৬২৫। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এর এক বছর পরে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এ এক লাখ ছাড়িয়ে যায়।

এসব একাউন্টে আমানতের পরিমাণ মার্চ শেষে ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৫০৫কোটি টাকা। ডিসেম্বরে জমার পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে কোটিপতিদের আমানত বেড়েছে ৯ হাজার ৬৪৭কোটি টাকা। কোটিপতি অ্যাকাউন্ট ও আমানত বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন তথ্য দিয়ে সকল কোটিপতি হিসাব এখানে আসেনি। কারণ অনেক কোটিপতি আছেন যারা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বাইরে রয়েছে।

এই সংখ্যা একদিকে যেমন দেশের উন্নয়ন ও আয় বাড়ার প্রমাণ দিচ্ছে অন্যদিকে এটি বৈষম্য বৃদ্ধিরও প্রমাণ। এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রবৃদ্ধি ভালো আছে। নতুন নতুন কলকারখানা হচ্ছে। আমদানি-রপ্তানি বাড়ছে। এতে মুনাফা বাড়ছে। তাই কোটিপতির সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু অন্যদিকে দরিদ্র মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। এটি প্রমাণ করে যে দেশে বৈষম্যও বেড়ে চলেছে।

আরও পড়ুনঃ  টাকা নয়, চেকে ভর্তি ইভ্যালীর লকার

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে দেখা যায়, মোট ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তুলনায় কোটিপতিদের একাউন্ট সংখ্যা ১ শতাংশও নয়। কিন্তু এসব অ্যাকাউন্টে মোট আমনতের প্রায় ৪৪ শতাংশ টাকা জমা আছে। এছাড়া চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকখাতে মোট অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাড়িয়েছে ১২.৭৩ কোটি এবং এসব অ্যাকাউন্টে মোট আমানত জমা আছে ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা।

ব্যাংকাররা বলছেন, কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সবগুলোই ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট নয়। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্টও আছে। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট আছে। ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে দেশে ধনকুবেরের (৫০ লাখ ডলারের বেশি সম্পদের অধিকারী) সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ১৪.৩ শতাংশ হারে। যা এই সময়ে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। বহুজাতিক আর্থিক পরামর্শ দানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েলথ এক্স এর প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছিল।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন