শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থের অভাবে পরিচালনে হিমসিম খাচ্ছে উসমানিয়া গ্লাস

অর্থের অভাবে পরিচালনে হিমসিম খাচ্ছে উসমানিয়া গ্লাস

উসমানিয়া গ্লাস শীট ফ্যাক্টরীর উৎপাদনের দুইটি চুল্লির ১টি দীর্ঘদিন বন্ধের কারনে অকেজো হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে অন্যটি অগ্নিকান্ডে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ অবস্থায় রয়েছে। এসব সমস্যার কারনে লোকসান পড়ে আর্থিক সমস্যায় ভুগছে কোম্পানিটি। ফলে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার খরচ চালাতে কোম্পানিটি হিমসিম খাচ্ছে। উসমানিয়া গ্লাস শীট ফ্যাক্টরীর ২০২০-২১ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষক এ তথ্য জানায়।

নিরীক্ষক জানান, উসমানিয়া গ্লাসের দুই চুল্লিতে পণ্য উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ২ কোটি ১ লাখ স্কয়ার ফিট। বাজারে চাহিদার তুলনায় কম উৎপাদন হওয়ায় অতিরিক্ত মজুদ পণ্য জমা পড়ে রয়েছে । যে কারনে ৬৭ লাখ স্কয়ার ফিট উৎপাদন ক্ষমতার ১ নম্বর চুল্লি ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে বন্ধ রয়েছে। এখন ওই চুল্লি মেরামত (ওভারহোলিং) করা ছাড়া পূণ:রায় চালু করা যাবে না। অপরদিক ২০২০ সালের ২৩ জুন ২ নম্বর চুল্লিতে বড় ধরনের অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটেছে। এতে করে ২ নম্বর চুল্লিটি ১ বছরের বেশি সময় বন্ধ রাখা হয়।

একইসঙ্গে কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদনে প্রযুক্তিগত সমস্যায় ভুগছে। প্রতিযোগিদের তুলনায় উসমানিয়া গ্লাসের সেকেলে পদ্ধতিতে উৎপাদন করে থাকে। যে কারনে বিক্রি মূল্য থেকে উৎপাদন ব্যয় বেশি হচ্ছে। ফলে কয়েক বছর ধরে কোম্পানিটি বড় ধরনের পরিচালন লোকসান গুণছে। পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ বেড়ে দাড়িঁয়েছে ৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। যে কোম্পানিটি দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় বড় ধরনের আর্থিক সংকটে ভুগছে। এ পরি্স্থিতিতে সরকারের আর্থিক সহযোগিতা ছাড়া কোম্পানিটির ভবিষ্যতে ব্যবসা পরিচালনায় খুবই শঙ্কা রয়েছে বলে জানায় নিরীক্ষক। তারপরেও কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট সেকেলে শীট গ্লাসের পরিবর্তে কনটেইনার গ্লাস উৎপাদনের জন্য একটি নতুন প্রকল্প করতে বাজার জরিপ ও অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। তবে এর অগ্রগতি খবুই ধীর হওয়ায় নিকট ভবিষ্যতে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের অনিশ্চয়তা রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এসটিএল ক্লাসিক পাওয়ার সাপ্লাই বাজারে

ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, সরকার নিয়ন্ত্রিত উসমানিয়া গ্লাসের পরিশোধিত মূলধন ১৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৬২ টাকা। কোম্পানিটির ২০২০-২১ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৬ দশমিক ৬৬ টাকা। নিয়মিত লোকসানে থাকায় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে থেকে কোম্পানিটি থেকে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিচ্ছে না।

গত ১৯৮৭ সালে পুঁজিবাজারে অনুমোদন পায় উসমানিয়া গ্লাস। কোম্পানটির শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার ৯০০টি। নেগেটিভ রিজার্ভ ৪৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। মোট শেয়ারের ২ শতাংশ মালিকানা উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে। এছাড়া সরকারি ৫১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং ৩৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন