দেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিলে সাম্প্রতিক সময়ে মাছের অভাবের কারণেই শুঁটকির চাহিদা ও উৎপাদন ক্রমেই কমে যাচ্ছে। ফলে ঐতিহ্যবাহী দেশীয়ও মাছের শুঁটকির ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারের পথে। এ দিকে এ অঞ্চলে সংরক্ষণাগার থাকলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়ানো সম্ভব বলে দাবি করছেন স্থানীয় শুঁটকি ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, চার দশক পূর্বে ৮০ দশকে চলনবিলের মাছের রমরমা শুঁটকির ব্যবসা শুরু হয়। আশ্বিনের শুরুতে তাড়াশ, উল্লাপাড়া, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, গুরুদাসপুর, সিংড়া এবং আত্রাই উপজেলা এলাকার বিলে অস্থায়ী আবাস গড়ে ব্যবসায়িরা শুঁটকির চাতাল বিছিয়ে শুঁটকি তৈরি করতেন। মাছ প্রাপ্তি সাপেক্ষে তা পৌষ মাস পর্যন্ত চলতো। পুঁটি, টাকি, ট্যাংড়া, খলিশা, চান্দা, বোয়াল, ঘুচি, ইচা বা ছোট চিংড়িসহ নানা প্রকারের বিষমুক্ত দেশীয়ও মাছের শুঁটকি তৈরি হতো শত শত টন। যা উওরের মোকাম সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতেন। আবার চলনবিলের শুঁটকি সৈয়দপুরের মহাজনদের হাত বদলে ভারতে রপ্তানি করা হতো। দেশে আসত বৈদেশিক মুদ্রা।
চলনবিলের হাট-বাজারে ঘুরে জানা যায়, শুঁটকি করার মতো পুঁটি মাছ প্রতি কেজি প্রকার ভেদে ৩৫ থেকে ১৬০। টাকি ১৪০ থেকে ১৫৫। খলিশা ৫৫ থেকে ৮৫। চান্দা ৬৫ থেকে ৭৫। ট্যাংড়া ২৭০ থেকে ৩৩০ টাকায় চাতাল মালিকরা কিনছেন। যা গত বছরের চেয়ে বেশি। পাশাপাশি শুঁটকির উপযোগী পর্যাপ্ত বোয়াল, শোল, গচি, ইছা মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ মৌসুমে প্রতি মণ পুঁটির শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ হাজার, টাকি ২৫ থেকে ৩৫, বোয়াল ৩২ থেকে ৩৬, খলিশা ১৬ থেকে ১৮ হাজার, চান্দা ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকায়। কিন্তু ওই সকল মোকামে শুঁটকির চাহিদা থাকলেও চলনবিলের ব্যবসায়ীরা সরবরাহ করতে পারছেন না।