শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শতভাগ দর বৃদ্ধি পাঁচ খাতে

শতভাগ দর বৃদ্ধি পাঁচ খাতে
  • লেনদেন বেড়ে ৭শ কোটি টাকার ঘরে
  • ডিএসইতে দর বেড়েছে ৭৪ ভাগ কোম্পানির

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বুধবার লেনদেন বেড়ে ৭শ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করেছে। অপরদিকে চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) এদিন লেনদেন বেড়েছে। দুই স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়। এদিন ডিএসইর ৭৪ ভাগ এবং সিএসইর ৭২ ভাগ কোম্পানির দর বেড়েছে। উভয় স্টকে সব ধরনের সূচক উত্থান হয়।

রেগুলেটরদের বিভিন্ন উন্নয়ন পরও দীর্ঘ সময় পুঁজিবাজার পতনের কবলে। সেই পতন দিন দিন বাড়ছিলো। হঠাৎ করেই চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস সেই পতন থমকে দাঁড়ালো। পরের কার্যদিবস পতন রুপে এসেছিল। সেখান থেকে ফের গতকাল বুধবার উত্থান ফিরলো পুঁজিবাজার। এদিন বিক্রেতার চাপ কমেছে। বাড়ে ক্রেতার চাপ।

বিভিন্ন মহলের শত চেষ্টায় পুঁজিবাজার উত্থানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। গত বৃহস্পতিবার আগারগাওয়ে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, সবাই ধৈর্য ধরুন, পুঁজিবাজার আগামী সপ্তাহে ভালো হবে। শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের এমন আশ্বাসের ঠিক পরের দুই কার্যদিবস সত্যিই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। সেই উত্থান গত মঙ্গলবার মন্দায় চলে আসে। কিন্তু সেখান থেকে ফের উত্থান রুপে ফিরলো পুঁজিবাজার।

ডিএসইতে পাঁচ খাতের শতভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। শতভাগ দর বৃদ্ধি খাতগুলো হলো- সিমেন্ট, পাট, পেপার, সেবা আবাসন এবং চামড়া। ইঞ্জিনিয়ারিং, বস্ত্র, বিমা, নন ব্যাংকিং আর্থিক, ওষুধ রসায়ন, ফান্ড, খাদ্য আনুষঙ্গিক, জ্বালানী শক্তি, বিবিধ, চামড়া এবং ভ্রমন অবসর খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। এদিন ব্যাংক এবং টেলিকম খাতের কোম্পানির শেয়ার দর কমা বাড়ায় এক ধরনের ছন্দা ছিল। শেয়ার দর বৃদ্ধির একই চিত্র ছিল পুঁজিবাজার সিএসইতে।

আরও পড়ুনঃ  কর্মসংস্থান ব্যাংকে ‘বাংলা থেকে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা

পুঁজিবাজারে (ডিএসই ও সিএসই) এদিন অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়। এর মধ্যে ডিএসইর ৭৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সিএসইর ৭২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়। অপরদিকে, ডিএসইর ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং সিএসইর ১৮ দশমিক ২৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর পতন হয়। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর এই ধরনের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা বলে জানায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসইতে বুধবার লেনদেন হয়েছে ৭৪৩ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার। গত মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৬৩৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ২৮১টির, কমেছে ৫১টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪৭টির। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪০ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৩৩ দশমিক ৮৫ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৫ দশমিক ৬০ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৯ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ৩৫৫ দশমিক ৮৫ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৪১২ দশমিক ৫৬ পয়েন্টে।

ডিএসইতে বেক্সিমকোর শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। ডিএসইতে বেক্সিমকো ৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আইপিডিসি ফাইন্যান্স ২৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ২৮ কোটি ১২ লাখ টাকা, জিএসপি ফাইন্যান্স ২২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ২১ কোটি ২৮ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ফার্মা ১৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিস ১৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ১৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা, শাইনপুকুর সিরামিকস ১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ও স্কয়ার ফার্মা ১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

আরও পড়ুনঃ  নীতি সুদহারে পরিবর্তন: বাড়বে ঋণ ও আমানতের সুদ

অপরদিকে, চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) এদিন লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। গত মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ১৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ২০৯টির, কমেছে ৫৩টির এবং পরিবর্তন হয়নি ২৮টির। সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৫৪ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৮২১ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে।

এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ৮ দশমিক ১০ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৮২ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৯১ দশমিক ২৭ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১০ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৯৬ দশমিক ৮৭ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৬২৩ দশমিক ২৩ পয়েন্টে, ১১ হাজার ২৮৭ দশমিক ৫২ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৯৭ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্টে।

সিএসইতে জিএসপি ফাইন্যান্সের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। সিএসইতে জিএসপি ফাইন্যান্স ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংক ১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, রিং শাইন ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা, জেএমআর হসপিটাল ৯৩ লাখ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক ৪৭ লাখ টাকা, ড্রাগন সোয়েটার ৪৫ লাখ টাকা, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স ৪৩ লাখ টাকা, শাইনপুকুর ৪১ লাখ টাকা এবং বেক্সিমকো ৪০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

আরও পড়ুনঃ  সবচেয়ে বড় রিজিওনাল সিডস ফর দ্যা ফিউচার প্রোগ্রাম উদ্বোধন করলো হুয়াওয়ে

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন