শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিষমুক্ত খিরাই চাষে লাভ বেশি

বিষমুক্ত খিরাই চাষে লাভ বেশি

বাগেরহাটের ফকিরহাটে অর্গানিক বেতাগায় ২০ একর জমিতে ৪০জন চাষি খিরাই চাষ করে আগের তুলনায় অনেক লাভবান হয়েছেন। খিরাই চাষে বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষিদের মুখে খুশির হাঁসি ফুটে উঠতে শুরু করেছে। কীটনাশক মুক্ত পদ্ধতিতে কোনো প্রকার কেমিক্যাল ছাড়াই খিরাই চাষ করায় বাজারে এর চাহিদা অনেকাংশে বেড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস প্রতিবছরের ন্যায় এবারও নানা প্রকার সহযোগিতা করায় তাদের ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখলে এ অঞ্চলে খিরাই চাষ বাড়ার সম্ভাবনা।

অর্গানিক বেতাগার খিরাই চাষি দেবাতুষ কুমার দাশ বলেন, তিনি গত কয়েক বছর আগে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নানা প্রকার সবজি চাষের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর সেখান থেকে বীজ নিয়ে প্রথম বছর খিরাই চাষ শুরু করেন। প্রথম বছর ফলন তেমন একটা ভালো না হলেও হাল ছাড়েননি তিনি। এর পর তিনি কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে চলতি বছর আবারও নতুন করে খিরাই এর চাষ শুরু করেন। প্রথম দিকে গাছের চেহারা তেমন একটা ভালো না হওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। কিন্তু স্থানীয় উপ-সহকারীর পরামর্শে তার ক্ষেতে ভালো ফলন দেখা দিয়েছে। তিনি দুইবিঘা জমিতে খিরাই চাষ করেছেন। ফলন যা হয়েছে তা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি।

তিনি আরো বলেন, একদিন বাদে একদিন অন্তরপর ১০ থেকে ১৫ মণ খিরাই তুলছেন ক্ষেত থেকে। বাজারে বর্তমানে তিনি পাইকারি ২৫ টাকা দর মূলে তা বিক্রয় করছেন। তার খিরাই খুলনা রাজশাহী চট্টগ্রাম এমন কি রাজধানী ঢাকায়ও বিক্রয় হচ্ছে। কোনো প্রকার কেমিক্যাল ছাড়াই ও কীটনাশকমুক্ত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করায় বাজারে এ খিরাই এর চাহিদা অনেক গুণ বেড়েছে। এই একই বিলের মনোতোষ কুমার দাশ বলেন, কৃষিবিভাগ থেকে বীজ, জৈব সার ও ফেরোমন ফাঁদ প্রদান করেছেন। যাতে বিষাক্তপোকা-মাকড় খিরাই গাছে লাগতে না পারে।

আরও পড়ুনঃ  নরসিংদীর খামারে প্রস্তুত ২শ’ কোটি টাকার পশু

চাষিরা বলেন, স্বল্প খরচে অধিক লাভ পাওয়ার আশায় তারা খিরাই চাষ করে থাকেন। মাত্র তিন মাসে খিরাই গাছে ফলন আসে। বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। খিরাই চাষে আগ্রহী হয়ে থাকেন।

বেতাগা ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস আলী শেখ বলেন, আমরা অর্গানিক বেতাগায় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করনের জন্য অর্গানিক পল্লী গড়েছিলাম। তবে মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামার সম্প্রসারণ করার কারণে অনেকজমি বেহাত হয়ে গেছে। তার পরেও যেটুকু আছে সেখানেই আমরা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করার চেষ্টা করছি।

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার প্রদীপ কুমার মন্ডল ও উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. নাছরুল মিল্লাত বলেন, আমরা কৃষি অফিস থেকে খিরাই চাষিদের জন্য জৈব সার, ফেরোমন ফাঁদ ও চাষিদের আর্থিকভাবে সহযোগীতা করেছি। শুধু তাই নয়, আমাদের একজন উপ-সহকারি কৃষি অফিসার সার্বক্ষণিক চাষিদের পাশে থেকে পরামর্শ প্রদান করেছেন। যে কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও অগার্নিক বেতাগার প্রতিষ্টাতা স্বপন দাশ বলেন, আমরা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করণের জন্য অর্গানিক বেতাগা প্রতিষ্ঠা করেছি। সে অনুযায়ি কৃষকরা নানা প্রকার সবজি উৎপাদন করছে কীটনাশক ছাড়াই। আমরা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে কৃষকদের উৎসাহ যোগাচ্ছি। আর তারাও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন