শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গো-খাদ্যের সঙ্কট মোকাবিলায় ভূমিকা রাখছে কচুরিপানা

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় গো-খাদ্য খড়ের তীব্র সংকট হওয়ায় কৃষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে গবাদি পশু পালন নিয়ে ও খাদ্য সংগ্রহে। আর এ কারণেই কৃষকরা তাদের গৃহপালিত গবাদীপশুকে বাধ্য হয়ে আশ-পাশের বিল-বানার, নদী-নালা থেকে কচুরিপানা সংগ্রহ করে খাওয়াচ্ছেন।

চলতি বছর কাপাসিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি আসার ফলে কৃষকরা তাদের ধানের খড় সংগ্রহ করতে পারছেন না। বেশির ভাগ খড়ের গাধা ভেসে গেছে বন্যার পানিতে এবং বৃষ্টির পানিতে ভিজে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আর যতটুকু পরিমাণ সংগ্রহে ছিলো তাও আবার শেষ হয়ে গেছে। এদিকে বন্যার পর কাপাসিয়ার বিভিন্ন এলাকায় দেখা দেয় গো-খাদ্য খড়ের চরম সংঙ্কট।

একদিকে মানুষের অভাব-অনটন, সঙ্গে দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব তার সঙ্গে যোগ হয়েছে গো খাদ্য খড়ের চরম সঙ্কট। সবকিছু মিলিয়ে প্রান্তিক কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের গৃহ পালিত পশুকে খাবারের যোগান দিতে উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিল, নদী-নালা থেকে কচুরিপানা সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলার খিরাটী এলাকার কৃষক মোঃ নুরুল ইসলাম, কুতুব উদ্দিন, সিরাজউদ্দিন, মোঃ সিরু মিয়া দৈনিক আনন্দবাজার’র প্রতিবেদককে জানান, একদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আবার অন্যদিকে গবাদি পশুর খাদ্য খড়ের সঙ্কট। তাই আমরা বাধ্য হয়েই গরুকে কচুরিপানা খাওয়াই। গরুর জীবন তো বাঁচাতে হবে। মেরে ফেলা তো যাবেনা।

এদিকে, হাটে বা বাজারে গো খাদ্য খড় কিনতে গিয়ে ফিরে আসতে হয় দাম বাড়ার কারণে। যৎসামান্য পাওয়া গেলেও দাম আকাশ ছোঁয়া। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাটে বা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শুকনা খড়ের প্রতি আঁটি ৮শ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

আরও পড়ুনঃ  সড়কের পাশে লাভের সবজি

গো-খাদ্য খড়ের বদলে গরুকে কচুরিপানা খাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কাপাসিয়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল আলম দৈনিক আনন্দবাজারকে জানান, কচুরিপানা প্রচলিত খাবারের মধ্যে পড়ে না। আর গবাদি পশুকে কচুরিপানা খাওয়ালে বা খাওয়ানোর ফলে গবাদি পশুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে গরুর যকৃতে। এক্ষেত্রে অনেক সময়ই গরুর পেট ফাঁপা, অরুচি ভাব ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।

তিনি আরো জানান, কাপাসিয়ার মানুষ সাধারণত গরুকে কচুরিপানা খাওয়ান না। কিন্তু বর্তমানে এই কারণে খাওয়াচ্ছে, বার বার বন্যা হওয়ার ফলে হঠাৎ করেই মানুষের গো-খাদ্যের প্রচন্ড অভাব হয়ে গেছে এবং বাজারে খড়ের আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে মানুষ খড় ক্রয় করতে পারছেনা। তাই মানুষ এক প্রকার বাধ্য হয়েই গরুকে কচুরিপানা খাওয়াচ্ছে। কচুরিপানা গুলো পানিতে ভালো করে পরিষ্কার করার পর রোদে শুকিয়ে খাওয়াতে হবে, কারণ কচুরিপানা তো আঁশ জাতীয় খাবার। রোদে শুকিয়ে খাওয়ালে এর মধ্যে থাকা জীবানুগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

আনন্দবাজার/শাহী/সবুজ

সংবাদটি শেয়ার করুন