শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে মরিচের বাম্পার ফলন

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থান হওয়ায় এ জেলার আবহাওয়া বরাবরই নাতিশীতোষ্ণ। আর তাই এখানে সব ধরনের ফসলই বেশ ভালো হয়। বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনা পরিস্থিতির মাঝেও ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মরিচের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে প্রশান্তির হাসি।

ফলন ভালো হওয়ায় এবং বাড়তি মুনাফার আশায় কৃষকরা প্রচন্ড রোদে সকাল থেকে সারাদিন মরিচ তোলা থেকে শুকানো পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্ষেত থেকে প্রথমে পাকা মরিচ সংগ্রহ করছে তারা। এরপর খেলার মাঠে, পাকা রাস্তায়, মিলের চাতালে, বাড়ির আঙ্গিনায় ও বিভিন্ন স্থানে মরিচ শুকাতে ব্যাস্ত রয়েছেন কৃষক পরিবারের সবাই।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ির মরিচ চাষি জসিমউদ্দিন জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় ব্যাপকভাবে মরিচের ফলন হয়েছে। তাই আমরা একটু বাড়তি মুনাফার আশায় করোনা উপেক্ষা করেই সারাদিন মরিচ ক্ষেতে পাকা মরিচ তোলার কাজ করি।

সদর উপজেলার মোলানখুড়ি গ্রামের আলিম নামের আরেক চাষি জানান, এবারে আমাদের কম খরচে বেশি ফলন হয়েছে। তাই লাভটা এবারে একটু বেশি হবে বলে আমরা আশা করছি।

এদিকে মরিচ চাষে শুধু চাষিরাই লাভবান নন, বেশি দাম হওয়ায় কৃষকের পাশাপাশি লাভবান হয়েছেন দিনমজুর-সহ ব্যবসায়ীরাও।

দিনমজুর নাসিমা জানান, আমি প্রখর রোদে সারাদিন মানুষের ক্ষেতে মরিচ তুলি। তাতে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাই। মাঝে কোন ধরনের কাজ ছিলোনা হাতে তাই অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করেছি। মরিচের ফলন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে দাম ভালো পওয়ায় ক্ষেতেই কাজ করছি। অন্যান্য বারের তুলনায় মজুরিও পেয়েছি বেশি। শ্রমিকরা একেকজনে প্রতিদিন ৩৫-৪০ কেজি মরিচ তুলে। মজুরি হিসাবে প্রতি কেজিতে পাই ৭ থেকে ৮ টাকা করে। যা থেকে আমাদের দৈনিক আয় প্রায় ২৫০-৩০০ টাকা।

আরও পড়ুনঃ  শীতের সবজিতে বাঁশখালীর বাজার সয়লাব

এবারে প্রতি বিঘা মরিচের চাষে খরচ হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকা। প্রতি মণ মরিচ ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে খরচ বাদ দিয়েও বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা লাভ হবে বলে জানান চাষিরা।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন জানান, এবার ঠাকুরগাঁওয়ে ১ হাজার ১১৭ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে । তবে কিছু কিছু এলাকায় ঘনঘন বৃষ্টি হওয়ার কারণে মরিচের গাছ মারা যাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেওয়া অব্যাহত রয়েছে ।

আনন্দবাজার/এফআইবি

সংবাদটি শেয়ার করুন