শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেরপুরে বোরো ধানের চারা গাছে পচন

শেরপুরে বোরো ধানের চারা গাছে পচন

শেরপুরের পাঁচটি গ্রামের প্রায় ২শ একর জমির চলতি বোরো ধানের চারা গাছে অজ্ঞাত কারণে পচন ধরেছে। ফলে এসব জমি থেকে কোনো ফসল না পাওয়ার আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ওইসব এলাকার শতাধিক চাষি।

ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা দাবি করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সময়মতো পরামর্শ না দেওয়া এবং নিম্নমানের ধানের বীজ রোপণের কারণেই চারা গাছ পচে যাওয়ার মূল কারণ।

জানা গেছে,, শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের খামারপাড়া, বাদাপাড়া, বাটিয়াপাড়া, পূর্বপাড়া ও ফকিরপাড়া গ্রামের চাষি শওকত আলীর আড়াই একর, সোহাগ মিয়ার দুই একর, আজহার আলীর দুই একর, ইব্রাহীমের এক একর, আতর আলীর দেড় একর, মহেজ আলীর দুই একর, কাজলের পাঁচ কাঠা, মুরাদের দশ কাঠা, চুন্নুর দশ কাঠা, সোহেলের এক একর, লান্ডুর দেড় একর, মুসলিমের দেড় একর, আনসার আলীর এক একরসহ শতাধিক চাষির প্রায় ২ শ একর বোরো ধানের চারা গাছে অজানা রোগে পচন ধরেছে।

গত দেড় মাস আগে স্থানীয় চাষিরা তাদের জমিতে ব্রি-ধান-২৯সহ অন্যান্য জাতের বোরো ধানের চারা রোপণ করেন। কিন্তু অজ্ঞাত রোগের কারণে শুধু মাত্র ব্রি-ধান-২৯ জাতের ধানের চালাগুলো বর্ধনশীল হয়নি। সেইসঙ্গে পাতাগুলো হলুদ রঙের বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং চারার গোড়ায় পচন ধরেছে। ফলে ওই ইউনিয়নের পাচটি গ্রামের প্রায় শতাধিক কৃষক হতাশ হয়ে পড়েছেন। অথচ এ সময়ে চারাগুলো থেকে ধানের ফলন বা গোছা বের হওয়ার কথা।

পাকুরিয়া ইউনিয়নের চাষিরা জানান, এসব কৃষকের মধ্যে অনেকে রযেছেন যারা ঋণ-ধার করে আবাদ করেছে। ধানের ফলন পেয়ে তারা তাদের সে ঋণ পরিশোধ করবে। কেউবা আবার এ ফলনের উপরই নির্ভর করে তাদের সারা বছরের খোরাকি। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ বা সহায়তা দাবি করছেন ।

আরও পড়ুনঃ  বঙ্গোপসাগরে আরও অগ্রসর হয়েছে গভীর নিম্নচাপ, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

বাংলাদেশ কৃষক সমিতি শেরপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক সোলাইমান আহাম্মেদ বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হলে তারা বলেন নিন্মমানের বীজের কারণে এমন হয়েছে। তাহলে আমাদের কথা হচ্ছে সরকার এই নিম্নমানের বীজ বাজারে কেন বিক্রির অনুমতি দিলো । সরকারের কাছে আমাদের দাবি ধানের চারা মরে যাওয়ার মূল কারণ উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার ।

পাকুরিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, চারা রোপণে কৌশলগত ভুল এবং যখন চারাগুলো রোপণ করা হয়েছিল তখন প্রচণ্ড শীত ছিল। এছাড়া ব্রি ধান-২৯ বীজের বিষয়েও তারা সন্দেহ করছেন। তাই এমনটা হয়েছে। তবে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের যে পরামর্শ দিয়েছেন তা মেনে ব্যবস্থা নিলে পচনরোধ সম্ভব ।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার প্রায় ৯২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৯৫ ভাগ আবাদ শেষ হয়েছে। আগামী এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে এ আবাদ উঠে যাবে ।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন