খুলনায় ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি ভালো ফলন পাওয়ায় তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভুট্টা চাষে এ বছর আরও বেশি লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছর ৩৯০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়। এ বছর ৪১২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ভুট্টা চাষ বৃদ্ধিতে ৩ হাজার জন চাষীকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে দুই কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার দেয়া হয়েছে।
কয়রা উপজেলার বৈরাগীর চক গ্রামের মনিন্দ্র জানান, তিন বছর ভুট্টা চাষ করছি। বিঘা প্রতি পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা খরচ হয়। এক বিঘা জমিতে ১২/১৩ মণ ভুট্টার দানা পাওয়া যায়। এবছর কৃষি অফিস থেকে বীজ ও সার পেয়েছি। তবে জমিতে আবাদ করতে দেরি হয়ে গেছে।
একই উপজেলার কুশুডাঙ্গা গ্রামের গোলাম মোস্তফা বলেন, সরকারী সহায়তা পেয়ে এ বছর এক বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। বিগত সময়ে ওই জমিতে এ মৌসুমে কোন ফসল আবাদ করা হত না। আশা করছি, ভালো ফলন পারো।
ডুমুরিয়ার কালিকাপুর মোঃ আজিজুর ফকির জানান, তার ২৭ শতাংশ জমিতে একেত্রে বাঁধাকপি ও ভুট্টা চাষ করেছেন। পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে এ পর্যন্ত তিনি ২৫ হাজার টাকার বাঁধাকপি বিক্রি করেছেন। এছাড়াও ভুট্টা থেকে ১২/১৫ হাজার টাকা আয় করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভুট্টা গাছ বড় হয়ে ছায়া দেওয়ার আগেই কপি উঠে যাচ্ছে। তাই ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না।
কয়রা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা কৃষকের মাঝে বীজ ও সার প্রণোদনা দিয়েছি। আশা করছি কৃষকরা লাভবান হবেন। এবছর কয়রা উপজেলায় ৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। আগামীতে উপজেলায় ভুট্টা চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, এ বছর ৭৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। এ উপজেলায় বাঁধাকপির সাথে একই জমিতে সহায়ক ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। একই জমিতে দুই ফসল চাষ বেশ লাভজনক। একই সার ও কীটনাশকে একটি ফসল উঠে গিয়ে পুষ্ট হচ্ছে ভুট্টা গাছ। আলুর সাথেও ভুট্টা চাষ লাভজনক।
খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, খুলনায় এবছর লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। কৃষকদের বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করার পাশাপাশি আমাদের মাঠ কর্মীরা সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।