শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দগোপালগঞ্জে সাম্মাম চাষে বাজিমাত

দগোপালগঞ্জে সাম্মাম চাষে বাজিমাত

গোপালগঞ্জে বানিজ্যিকভাবে সাম্মাম নামে একটি বিদেশী ফলের চাষ করে ব্যপক সাড়া ফেলেছে আইয়ুব আলী নামে সিঙ্গাপুর প্রবাসী একজন কৃষক। হলুদ রংয়ের এই সাম্মাম ফল দেখতেও যেমন লোভনীয় আবার খেতেও সুস্বাদু। ফলটি মিষ্টি কম হলেও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। ডায়েবেটিকসের রোগীসহ সব বয়সী মানুষের জন্য সাম্মাম একটি উপযোগী খাবার ফল। বাংলাদেশের বাজারসেহ বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রে এ ফলের কদর রয়েছে বেশ। গোপালগঞ্জের বাজারসহ বাংলাদেশের বাজারে প্রতি কেজি সাম্মাম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা দরে। স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন উচ্চমূল্যের এ ফল চাষ করে ব্যপক সাড়া ফেলেছে গোপালগঞ্জ জেলার গোবরা ইউনিয়নের চরগোবরা গ্রামের মো. আইয়ুব আলী শেখ নামের একজন কৃষক।

৫৫ বছর বয়সের কৃষক মো. আইয়ুব শেখ গত জুন মাসের প্রথম দিকে নিজের পৌনে এক বিঘা অনাবাদি জমি মানে ৪০ শতাংশ জমিতে এই বিদেশী ফল সাম্মামের চাষ শুরু করেন। কম খরচে মাত্র ২ মাসে তার জমিতে ফলনও হয়েছে ভালো। আশানুরুপ ফলন হওয়ায় খুশি আইয়ুব শেখ বতর্মানে ক্ষেত থেকে সাম্মাম তুলে স্থানীয় বাজারসহ রাজধানী ঢাকায়ও বাজারজাত করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ৬০ হাজার টাকা করে ব্যয় করে ২ মাসে কমপক্ষে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা আয় করবেন বলে জানিয়েছেন আইয়ুব শেখ। ইতিমধ্যে তিনি এক লাখ টাকারও বেশি সাম্মাম ফল বিক্রি করেছেন। পাড়া-প্রতিবেশি ও আত্বীয়-স্বজনদেরও দিয়েছেন উপহার।

সিঙ্গাপুর প্রবাসী মো, আইয়ুব আলী শেখ আমাদের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান বাবুলকে জানিয়েছেন, আমি সিঙ্গপুরে চাকরি করতাম। চাকরি খুব বেশি ভালো লাগতোনা। পরিশ্রমও হতো খুব বেশি। অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারনে ফিরে আসি দেশে। দেশে ফিরে ইউটিউবে সাম্মাম চাষ দেখতাম। সাম্মান চাষ দেখে দেখে এক সময় সাম্মাম চাষের দিকে ঝুকে পড়লাম। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তারের সহযোগিতা, পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে মালচিং ফিলিং পদ্ধতিতে সাম্মাম চাষ শুরু করলাম। ফিলিং পদ্দতিতে সাম্মাম চাষ করলে মাটি রস ও গাছের খাদ্য ধরে রাখতে পারে। ফলে সারেরও কোন অপচয় হয়না। সাম্মাম চাষে ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করেছি। এখানে হলুদ ফ্রেমন ট্রাফ স্থাপন করা হয়েছে। তাই কীটনাশক তেমন প্রয়োগ করতে হয়নি। ৪০ শতাংশ জমিতে সাম্মাম চাষাবাদ করে ৬০ দিনের মাথায় জমি থেকে সাম্মাম ঘরে তুলে বাজারজাত শুরু করেছি। আড়াই কেজি থেকে সাড়ে চার কেজি পর্যন্ত হয়েছে প্রত্যকটি সাম্মামের ওজন। সাম্মাম চাষে আমার ব্যয় হয়েছে ৫৫ হাজার টাকা। চলতি মাসের মধ্যেই তিন লাখ টাকার সাম্মাম বাজারে বিক্রি করতে পারবো বলে আমি আসা করছি। এতে আমার কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা আয় হবে। দেশের শিক্ষিত বেকার যুবকরা চাইলে লাভজনক সাম্মাম চাষ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ  চলনবিলে কলাচাষে সুখবর

গোপালগঞ্জের সদর উপজেলা ইউএনও মো, মহসিন উদ্দিন মনে করেন, বিদেশী ফল সাম্মাম চাষে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে গোপালগঞ্জে। বাণিজ্যিকভাবে এ চাষ করে বেকারত্ব দুর করা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি ।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন