শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শ্রীনগরে

ছাদ বাগানে কদর বেড়েছে ভ্রাম্যমাণ নার্সারির

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ভ্রাম্যমাণ নার্সারির কদর বাড়ছে। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, রাস্তার মোড়ে কিংবা পাড়ায়-মহল্লায় ভ্রাম্যমাণ নার্সারির ভ্যানের দেখা মিলছে। ফলজ, বনজ, ওষুধীসহ বিভিন্ন প্রজাতির চারা ও কলমকাটা গাছ-গাছালি মানুষের নজর কাড়ছে। ২০-৫০০ টাকার মধ্যে এসব ভ্রাম্যমাণ নার্সারিগুলোতে মিলছে পছন্দের গাছ।

ছাদ বাগান কিংবা অফিস বারান্দার টবে রাখার জন্য বিভিন্ন রকমের পাতাবাহার ও ফুলের চারা গাছও কেনাবেচা হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ নার্সারিতে। হাতের নাগালে সস্তায় এসব গাছের চারা কিনতে ভাসমান নার্সারিতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। নার্সারি ব্যবসায়ীরাও ঘুরে বেড়িয়ে এসব গাছ বিক্রি করে আয় করতে পারছেন হাজার হাজার টাকা।

লক্ষ্য করা যায়, ভ্যান গাড়ীতে বিভিন্ন চারা গাছের পসরা সাজিয়ে বিভিন্ন অলিগলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ নার্সারির ভ্যান। বৃক্ষপ্রেমীদের নজর কাড়ছে ভাসমান নার্সারিগুলো। হাতের নাগানে পেয়ে পছন্দের প্রয়োজনীয় গাছ কিনে বাড়ি ফিরছেন পথচারীরা।

শ্রীনগর উপজেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা মো. সেলিম হোসেন খান জানিয়েছেন, উপজেলায় প্রাইভেটভাবে বাণিজ্যিক নার্সারী রয়েছে ৫টি ও বন বিভাগের ১টি নার্সারী রয়েছে। তিনি বলেন, উদ্যোক্তরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজস্ব জমিতে নার্সারী ব্যবসা করে আর্ধিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

জানা গেছে, গ্রামগঞ্জের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় ও বিন্ডিংয়ে ছাদে ফল, সবজিসহ ফুলের বাগান শোভা পাচ্ছে। বিশেষ করে দিনদিন মানুষের ছাদ বাগানের দিকে ঝুকেছেন। সবুজ ছাদ বাগানে মিলছে সৌখিনতার ছোঁয়া। উদ্যোক্তারা নিজস্ব বাগানের সুন্দর্যবর্ধণে নতুন নতুন গাছ সংগ্রহে ভাসমান নার্সারির উপর আস্তা পাচ্ছেন। এতে এলাকায় ভ্রাম্যমাণ নার্সারির ব্যবসায়ীর সংখ্যাও বাড়ছে। শ্রীনগর সদর এলাকার কয়েকজন ছাদ বাগানী জানান, ২০ টাকায় জবা ফুলের চারা, ৫০ টাকায় গোলাপের চারা, ২৫ টাকায় কৃষ্ণচূরা মরিচ ও ১০ টাকায় ভালজাতের পেঁপের চারা মিলছে ভ্রাম্যমাণ নার্সারিতে। এসব চারা গাছ মাটির টবে কিংবা প্লাষ্টিকের পুরনো পাত্রে রোপণ করা সহজ। সস্তায় পছন্দের গাছের চারা সংগ্রহ করতে পেরে বাগানীরাও আনন্দ প্রকাশ করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  শ্রীপুরের তরুলতায় নানান জাতের আমের বাহার

মো. শফিক (৩০) নামে এক নার্সারি ব্যবসায়ী বলেন, তার বাড়ি শেরপুর। পার্শ্ববর্তী সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগরে একটি জায়গায় ভাড়া নিয়ে নার্সারির ব্যবসা শুরু করেন। একযুগ ধরে এই পেশায় আছেন। ভ্রাম্যমাণ নার্সারির জন্য ২টি ভ্যানগাড়ি রয়েছে তারা। সপ্তাহে ৩-৪ দিন ভ্যান গাড়িতে করে নিজস্ব নার্সারিতে উৎপাদিত গাছের চারা বিক্রি করেন তিনি। এতে মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা আয় করতে পারছেন। তিনি বলেন, আমার জানামতে শ্রীনগরসহ আশপাশের উপজেলায় অন্তত ৩০টি ভ্রাম্যমাণ নার্সারি রয়েছে। শ্রমিকের বেতন ও অন্যান্য খরচ বাদে বাৎসরিক সাড়ে ৩ লাখ টাকা আয় হচ্ছে তার।

শ্রীনগর উপজেলার কুকুটিয়া এলাকার নার্সারি ব্যবসায়ী মো. হোসেন ঢালী জানান, ৩৫ বছর ধরে নার্সারির ব্যবসা করছি। নিজ বাড়িতেই গড়ে তুলেছি নার্সারি। বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য চারা গাছ ও কলমকাটা গাছের সমারোহ রয়েছে এখানে। এগুলো তিনি লৌহজংয়ের গোয়ালীমানন্দ্রা হাট, নওপাড়া বাজার, শ্রীনগর বাজার, সিরাজদিখান বাজারসহ বিভিন্ন সাপ্তাহিক হাটের দিন গাছের চারা বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন বৃক্ষ মেলায় অংশগ্রহন করছি। তিনি বলেন, একই পেশায় তার দুই পুত্র স্বপন ঢালী ও ইয়ানুছ ঢালী লৌহজং উপজেলার হলুদিয়া-কনসার সড়কের পাশে বিশাল নার্সারি গড়ে তুলেছেন।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন