লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের তোরাবগন্জ ইউনিয়নে গ্রাম্য চিকিৎসক (পশু)র ভুল চিকিৎসায় প্রিজিয়াম জাতের একটি দুগ্ধ গাভীর মৃত্যু হয়েছে। গ্রাম্য চিকিৎসক হুমায়ুন আহম্মেদ (৩৫) নামের ব্যক্তির বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী (গাভীর মালিক) মো.মুসলিম(৩৫)। আসামী হুমায়ুন আহম্মেদ উপজেলার তোরাবগন্জ এলাকার ধনা মিয়াগো বাড়ির নুরুল আমিনের সন্তান।
মামলার এজেহারে বাদী মো. মুসলিম দাবি করেন, তিনি অষ্ট্রেলিয়ান উন্নত প্রিজিয়ান জাতের ০৩ টি গরু লালন-পালন করেন। তার একটি গাভী বাচ্চা প্রসব করেন। আসামী তার পাশে থাকায় তার গাভী ও গরুগুলো দেখতে যায়। গরুগুলো দেখে আসামী তাদের চিকিৎসা দিতে বলেন। গাভীর মালিক আসামীকে বিকেলে আসতে বলেন।ঘটনটার দিন আসামী এসে গাভীকে দুটি ইনজেকশন ও কিছু স্যালাইন দিতে বললে গাভীর মালিক সেগুলো দিতে বলেন। বাচ্চা প্রসবের মাত্র কয়েকদিন এর মধ্য আসামী গাভীকে কয়েকটি ইনজেকশন ও স্যালাইন দিতে একাধিক বার পুশ করেন। পরবর্তিতে কয়েকটি পুশ করে গাভীকে স্যালাইন ও ইনজেকশন গুলো দিলে তাৎক্ষণিক গাভীটি মাটি বিকট শব্দ করে শুয়ে পড়েন। আসামী নিজ হস্তে দা আনতে বলেন এবং দা আনিলে তিনি নিজ হাতে গাভীকে জবাই করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। গাভীটির বাজার মূল্য ছিল প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। গাভীর মৃত্যুর কারণে গাভীর মালিক এবং তার পরিবার শোকাহত।
আসামী কোন মতে স্বীকার করতে অনিহা প্রকাশ করছে তার চিকিৎসা ভূল ছিল না । বিভিন্ন পশু চিকিৎসকের সাথে আলাপ করলে তারা বলেন ভুল চিকিৎসায় গাভীটি মাটিতে লুটে পড়ে স্ট্রোক মারা যায়।
বাদী আরও দাবি করেন, ভুল চিকিৎসায় গাভীর মৃত্যু হয়েছে মর্মে ন্থানীয় থানায় অভিযোগ দাখিল করিলে আসামী কোনমতে ধরণা দিচ্ছে না। বিভিন্ন রকম তালবাহনা শুরু করেন। আসামী বিভিন্নভাবে তাকে প্রাণ নাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আসামী ভন্ড, ভূয়া, প্রতারক, গাদ্দার প্রকৃতির লোক। আসামীর চলচাতুরীর কারণে আদালতে মামলা দায়ের করতে বাধ্য হয়েছি। গ্রাম্য ভুয়া চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় তার গাভীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি দ্রুত আসামী বিচার দাবি করেন।
এ্যাডভোকেট মো.রেহানুল ইসলাম (জেলা জজ কোর্ট) মামলাটি আর্জি দাখিল করিলে আদালত আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। আসামী পশু চিকিৎসক হুমায়ুন আহম্মেদ জেলে রয়েছে।
স্থানীয় বিভিন্ন খামারে খবর নিয়ে জানা যায়, আসামী হুমায়ূন আহম্মেদ বেশ কিছু খামারী ও শখে লালন-পালন গরুকে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে ঢেলে দেন এবং কিছু গরু তাৎক্ষণিক মারা যান।
তারা আরও জানান, আসামী হুমায়ুন আহম্মেদ এর পশু চিকিৎসার কোন সরকারি সনদ ও কাগজ-পত্র নেই। তিনি দেখে দেখে ও শুনে শুনে পশু চিকিৎসা করাচ্ছেন। তার পশু চিকিৎসার কোন চিকিৎসা কেন্দ্রিক পারমিশন নেই।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, হুমায়ুন আহম্মেদ তার কোন পশু চিকিৎসার সনদ বা পারমিশন নেই। তিনি প্রাণী সম্পদ বিভাগের বাচ্চা প্রজনন প্রকল্পের নিয়োগকৃত স্টাফ। তার চিকিৎসার কারণে গরু বা পশু মারা গেলে প্রাণী সম্পদ বিভাগ দায়ী নয়। তবে তিনি আরও বলেন, মূল্যবান পশুকে রেজিস্ট্রার ডাক্তার দেখালে ভালো হয়। তাহলে সঠিক চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
আনন্দবাজার/শহক