শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নকল বীজে নিঃস্ব ভুট্টাচাষি

নকল বীজে নিঃস্ব ভুট্টাচাষি

লালমনিহাটের হাতীবান্ধায় নকল হাইব্রিড জাতের ভুট্টা বীজ লাগিয়ে কয়েক একর জমির চারা গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। এমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উপজেলার কয়েকজন কৃষক। নকল জাতের হাইব্রিড ভুট্টা বীজ লাগিয়ে ১০ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে আবুল হোসেনের এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়. উপজেলার বড়খাতা পূর্ব সারডুবি এলাকায় প্রায় ১০ থেকে ১৫ বিঘা জমির ভুট্টা খেতের চারা গাছগুলো দিন দিন আগা এবং গোড়া পচে যাচ্ছে। কেউ আবার তুলে গরুর জন্য নিয়ে যাচ্ছে। নকল বীজের বিষয়টি বুঝতে পেরে কৃষক ট্রাক্টর দিয়ে পুনরায় চাষ করে নতুন করে বীজ জমিতে লাগাতে দেখা গেছে। কৃষকরা বলছে পালোয়ান-৯১২০ জাতের হাইব্রিড ভুট্টা বীজ লাগিয়ে এ সমস্যা হয়েছে। এ কোম্পানির কাছে আমরা ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।

উপজেলার বড়খাতা পূর্ব সারডুবি গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন (৫০) বলেন, লাভের উপর টাকা নিয়ে বর্গার ১০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করছি। ১০ দিন আগে বড়খাতা বাজার থেকে পালোয়ান ৯১২০ জাতের হাইব্রিড ভুট্টা বীজ নিয়ে ১০ বিঘা জমিতে লাগিয়েছি। কয়েকদিন পর দেখি চারা গজিয়ে বীজ এবং গাছের আগা পঁচে যাচ্ছে। এতে বুঝতে পারলাম যে  নকল বীজ। এখন জমির চারা নষ্ট করে আবারও য নতুন করে ভুট্টা বীজ লাগাচ্ছি। বাজারে যে সার বীজের দাম তাতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। তাই পালোয়ান ভুট্টা কোম্পানির কাছে আমারা ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।

জানা গেছে, লালমনিরহাটের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা-ধরলাসহ বিভিন্ন ছোটখাটো নদীর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলসহ জেলার ৫ উপজেলায় প্রতিবছরই ভুট্টার চাষ করেন কৃষকেরা। জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হচ্ছে ভুট্টা। চলতি বছরে এ মৌসুমে জেলার বেশী ভাগ কৃষক ভুট্টার চাষ করেন। বাজারগুলোতে নকল ভুট্টা বীজ সয়লাবের কারণে অনেক কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।

আরও পড়ুনঃ  মেঘনায় বাইলা রেণু নিধনের মহোৎসব

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রহমত আলী (৫২)  বলেন, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ধার দেনা করে কষ্ট করে জমিতে ভুট্টা বীজ লাগাইছি। এখন ভুট্টা বীজ ও গাছ মরে যাচ্ছে এখন আমাদের এ ক্ষতিপূরণ কে দিবে।

গড্ডিমারী ইউনিয়নের মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিবছর ভুট্টা লাগানোর সময় অবৈধভাবে নকল বীজ সরবরাহ করে বাজারে বিক্রি করে। এতে কৃষকরা প্রতারিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বিষয়ে পালোয়ান ভুট্টা বীজ কোম্পানির কোন প্রতিনিধিকে পাওয়া যায়নি।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন মিয়া কে বলেন, বিষয়টি জেনেছি।  সরেজমিনে একজন কৃষি উপসহকারিকে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ওই কৃষক বীজ কেনার ভাউচারসহ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ওই কৃষক হাতীবান্ধা কৃষি অফিসার ও নির্বাহী অফিসারকে লিখিত অভিযোগ দিলে ভুট্টা বীজ কোম্পানির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন