ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রি ৭৫’ জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। এ জাতের ধান শুরু থেকে কাটা পর্যন্ত মোট ১১০দিন সময় লাগছে। প্রাথমিক ভাবে মাঠ পরীক্ষায় বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা। নতুন জাতের এই ধান ফলন ভালো ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তবে এ ধান উত্তোলনের পর জমিতে সরিষা, বেগুন-মূলাসহ নানা জাতের শাকসবজির আবাদ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।
কৃষকরা জানায় এ ধান আবাদ মূলত আগস্টের শেষের দিকে ধান রোপন করে নভেম্বরের শেষের দিকে ঘরে ধান তোলা যায়। যা অন্য ধানের চাইতে ২০ থেকে ২৫ দিন আগেই ব্রি ৭৫’ জাতের ধান কৃষকের ঘরে উঠছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে ব্রি ৭৫’ জাতের ধান ৩০ জন কৃষক আবাদ করেন। এরমধ্যে কৃষকদের প্রদর্শনী রয়েছে ১০টি।
সরেজমিনে দেখা যায়,মাঠে মাঠে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আমন ক্ষেতে সবুজে সমারোহ হয়ে আছে। ইতিমধ্যে বেশীভাগ জমিতে ধানের শীষ বের হয়েছে। আবার কোন কোন জমিতে আগাম ধান পাকতে শুরু করেছে। ধানকে ঘিরে স্থানীয় কৃষকরা যেন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, ‘এই ধান অন্য ধানের তুলনায় অনেক উন্নত। চাষে সময় কম লাগে। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় বালাইনাশক স্প্রে করতে হয় না। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না থাকার কারণে ফলন ভালো হয়। এই ধান আগাম বাজারে আসায় দাম বেশ পাওয়া যায়। তাছাড়া এই ধান তোলার পর সরিষা, বেগুন-মূলাসহ নানা জাতের শাকসবজির আবাদ করা যায় । এতে স্থানীয় কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছে।
উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের দ্বিজয়পুর গ্রামের কৃষক মো: জসিম মিয়া বলেন, চলতি মৌসুমে তিনি ৩৩ বিঘা জমিতে নতুন ব্রি ৭৫’ জাতের ধান আবাদ করেন। ফলন হয়েছে বেশ ভাল। বিঘা প্রতি ২০-২২ মণের উপরে ফল পাবেন। বৃহস্পতিবার এই ধান কাটা হয়েছে। এখন ওই জমিতে তিনি সরিষা ও সবজি আবাদ করবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, আমাদের ব্রি ৭৫’ জাতের ধানসহ বেশ কয়েকটি নতুন জাত রয়েছে। ওইসব নতুন জাতের ধান তুলনামূলক চাষে কৃষকের খরচও কম লাগে। তাছাড়া এ ধান গতানুগতিক ধান চাষের এক মাস আগে ঘরে তোলা যায়। এ ধান কাটার পর জমিতে তেল জাতীয় সরিষা সূর্য্যমূখী সহ আগাম রবি শষ্য চাষ করা যায়। তাই এ জাতীয় ধান চাষ করতে উপজেলার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।