বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাষির স্বপ্ন ধানের শীষে

চাষির স্বপ্ন ধানের শীষে

বন্যা, খরার পরও গত দু-তিন বছরের তুলনায় এবার নীলফামারীর ৬ উপজেলায় ধানের আশানুরূপ ফলন হয়েছে। জেলার ফসলের মাঠজুড়ে এখন সোনালি আমন ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, জেলায় এবার এক লাখ ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জিত জমির পরিমাণ ৫ হেক্টর বেশি। এবার উফশি ৯১ হাজার ২২৫ হেক্টর, ¯’ানীয় জাত ৩৬৮ হেক্টর এবং হাইব্রিড ধান ২১ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। আগামী মাসের ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে জোরেশোরে ধান কাটা শুরু হবে বলে কৃষকরা জানান।

উপজেলা পর্যায়ে অর্জিত জমির পরিমাণ হলো সদর উপজেলায় ২৮ হাজার ২০৫ হেক্টর, ডোমারে ১৮ হাজার ৪৩৫ হেক্টর, ডিমলায় ২০ হাজার ৪৩৮ হেক্টর, জলঢাকায় ২২ হাজার ৯৩২ হেক্টর, কিশোরগঞ্জে ১৪ হাজার ৮৮৫ হেক্টর এবং সৈয়দপুর উপজেলায় আট হাজার ২১০ হেক্টর।

জেলা শহরের ধনীপাড়ার কৃষক মুক্তারুল ইসলাম (৩৬) জানান, তিনি এবার ছয় বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন। ফলনও বেশ ভালোই হয়েছে। ধান কাটা ও মাড়াই করতে আরও ১৫-২০ দিন সময় লাগবে। বর্তমানে ধানের বাজার ভালো, সবকিছু মিলে লোকসান হবে না।

একই এলাকার বর্গাচাষি মুহিন আনছারী (৪৬) বলেন, ‘পাশের বাড়ির একজনের দেড় বিঘা জমি নিয়ে হাইব্রিড ধানের আবাদ করি। বর্ষার শুরুতে আকাশে পানির অভাব ছিল, প্রথমবার সেচের পানি দিয়ে ধান লাগালেও পরে প্রচুর আকাশের পানি পাওয়া গেছে। ধান আবাদে তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। ফলনও ভালোই হয়েছে। আশা করি, বিঘায় ১২ থেকে ১৩ মণ ধান হবে।’

আরও পড়ুনঃ  ড্রাগনে ক্ষতি কোটি টাকা

নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের চড়চড়াবাড়ী গ্রামের কৃষক আতিয়ার (৫২) বলেন, ‘প্রতি বছর আট থেকে দশ বিঘা জমিতে ধান লাগাই। বর্ষার শুরুতে খরার কারণে শ্যালো মেশিন দিয়ে ধানের চাড়া লাগানোর কাজ শুরু করলেও পরে প্রচুর বৃষ্টি নামে। ওই বৃষ্টির পানি দিয়ে ধান লাগানো শেষ করি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বাজার ভালো থাকলে লাভবান হতে পারবো।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে উঠান বৈঠক করে ধানের রোগবালাই দমনসহ সঠিক সময়ে কর্তনের পরামর্শ দেওয়া হ”েছ। এবার সদরে ২৮ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরেও গত দু-তিন বছরের তুলনায় এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। গত আমন মৌসুমের তুলনায় এবার ৫ হেক্টর জমি বেশি আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে আগামজাতের ১৭ হাজার ৫০ হেক্টর জমির আমন ধান কর্তন করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন