শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সিত্রাংয়ের তাণ্ডব----

উপকূলের কৃষিতে সর্বোচ্চ ক্ষতি

উপকূলের কৃষিতে সর্বোচ্চ ক্ষতি

প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সুন্দরবন উপকূলীয় খুলনার পাইকগাছার লোনা পানির রোদে পোড়া মানুষদের কাছে যেন এক মুর্তিমান আতঙ্কের নাম। এর কারণ একের পর এক প্রতি বছর সিডর, আইলা, মহসেন, ফণি, নার্গিস, তিতলি, বুলবুল, আমফান, ইয়াস ও সর্বশেষ সিত্রাং নামক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে এ জনপদে। বার বার গুড়িয়ে দেয় লাখো মানুষের একেকটি সোনালি সকালের স্বপ্নের প্রত্যাশা। তবে সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সুন্দরবন উপকূলীয় খুলনা অঞ্চলের পাইকগাছায় কোনো হতাহতের ঘটনা  না ঘটলেও বৃষ্টির প্রভাবে জেলার সর্বোচ্চ মাছের ঘের, কাঁচা ঘর-বাড়ি ও কৃষি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসময় ১১২টি মৎস্য ঘের, ২০৭ টি কাঁচা ঘর ও ১৮৭ হেক্টর জমির কৃষি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। তবে উপজেলায় এবারই প্রথম কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে সুরক্ষিত ছিল ওয়াপদার বেড়িবাঁধগুলো।

উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, সিত্রাং এর প্রভাবে উপজেলায় সর্বোমোট প্রায় ১৮৭ হেক্টর জমির কৃষি ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। যার বেশির ভাগই আমন ফসল বলেও জানান তিনি।

পাইকগাছা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা টিপু সুলতান জানান, সিত্রাং’র প্রভাবে উপজেলার অন্তত ৮৩জন চাষির ১১২টি মৎস্য ঘেরের প্রায় ৬.১ টন মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে উপজেলায় সর্বোচ্চ গড়ুইখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন মৎস্য ঘের তুলনামূলক বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৩০ লাখ ৭১ হাজার টাকা। মূলত রবিবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অতি বৃষ্টি এবং পানি সরবরাহের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বেশিরভাগ মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়। এছাড়া গড়ুইখালীর নদী তীরবর্তী মাছের ঘেরগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেও দাবি তার।

আরও পড়ুনঃ  বোরো ধানে চিটা দিশেহারা কৃষক

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, দুর্যোগে আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ও কার্যত এর প্রভাব প্রতিফলিত না হওয়ায় সর্বসাধারণ দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়নি।

এব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব কুমার পাল জানান, খুলনা জেলায় শুধুমাত্র পাইকগাছা উপজেলায় মৎস্য ঘেরের বেশি ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। সেখানকার ৮৩ জন মৎস্যচাষির ১১২টি ঘেরের ৬.১ মেট্রিকটন মাছের ক্ষতি হয়েছে।

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, সিত্রাং’র আগাম সতর্কবার্তায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে বেশ আগেই সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। এছাড়া দুর্যোগের প্রভাবও কম ছিল তাই জানমালের বিশেষ ক্ষতি হয়নি। এছাড়া এবারই প্রথম কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপজেলার বেড়িবাঁধের কোথাও ভাঙনের ঘটনা ঘটেনি। অতি বৃষ্টিতে কিছু এলাকার মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন