শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাগ্য ফিরেছে কচুতে

ভাগ্য ফিরেছে কচুতে
  • একের ভেতর তিন
  • কচুচাষে লাভ বেশি

মিরসরাইয়ে দিনদিন বাড়ছে কচুর আবাদ। কৃষকরাও দেখছে সফলতার মুখ। কচু চাষ করে ভাগ্যবদল হয়েছে অধিকাংশ কৃষকের। উপজেলায় এবার ১৫০ একর জমিতে কচুর আবাদ হয়েছে। অনাবাদি ও অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে কচু চাষ করে এক জমি থেকেই কৃষক বিক্রি করতে পারেন কচুর লতি, ফুল ও মূল কাঠ কচু।

মিরসরাই পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কৃষক মো. হারুন অর রশিদ প্রায় ২২ বছর ধরে কচু চাষ করছেন। তাঁর জমিগুলো নিচু হওয়ায় অন্যান্য সবজি চাষ না হওয়ায় তিনি দীর্ঘ সময় ধরে কচু চাষ করে আসছেন। এবারো নিজের ১শ শতক জমিতে আবাদ করেছেন। অন্যের কাছ থেকে চাষকৃত আরো ৭০ শতক আবাদি ক্ষেত ক্রয় করেছেন। ইতোমধ্যে ১২০ শতকের কচু বাজারে বিক্রিও করেছেন। আরো এক মাস ধরে কচু বিক্রি করতে পারবেন তিনি। ১২০ শতকের কচু তিনি ২ লাখ ২০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন।

উপজেলার ১১নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের কচুয়া এলাকায় গিয়ে কথা হয় কৃষক নুর হোসেন, নওশা মিয়ার সাথে। নুর হোসেন বলেন, আমরা এবার ৬০ শতক জমিতে কচুর আবাদ করেছি। ইতোমধ্যে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকার কচু বিক্রি হয়েছে। আরো ১৫দিন বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, কচু চাষে কষ্ট হলেও ভালো লাভ হয়। কচুর ফুল (স্থানীয় ভাষায় পোঁপা) ও লতি বিক্রি করা যায়। দুএকদিন পর পর জমি থেকে কচু তুলে পিকআপ যোগে সীতাকুন্ড, বারইয়ারহাট, মিঠাছরা, আবুতোরাব বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে পাইকারীভাবে বিক্রি করে থাকি। সেখান থেকে পাইকাররা ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী সহ বিভিন্ন শহরে নিয়ে যান।

আরও পড়ুনঃ  ভালো নেই মৌ-চাষিরা

আরেক চাষী আবুল হোসেন বলেন, মিরসরাই উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আমাদের গ্রামে বেশি কচু আবাদ করা হয়। বাপ-দাদার আমল থেকে কচু চাষ হয়ে আসছে। আমরা এখনো কচু আবাদ করে যাচ্ছি। কচু চাষের কারণে কচুয়া গ্রাম নামকরণ হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হতে পারে। তবে সঠিক বলতে পারবো না।

জানা গেছে, জমি থেকে কচু তোলার কাজ ভালো আয় করছেন একাধিক কৃষি শ্রমিক। সবাই একাজ করতে পারে না। তাই কৃষকদের কাছে তাদের আলাদা কদর রয়েছে।

কথা হয় এমন একজন শ্রমিক মো. ফারুকের সাথে। তিনি বলেন, তিনি ২৫ শতক জমিতে কচু আবাদ করেছিলেন। ২২ হাজার টাকার ফুল ও লতি বিক্রি করেছি । এরপর অন্যের কাছে ৬৫ হাজার টাকায় ক্ষেত বিক্রি করে দিয়েছি।  আমার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এখন অন্যের জমিতে কাজ করছি। ১৫০ টি কচু জমি থেকে তুলে বিক্রির জন্য তৈরি করে দিলে ৭০০ টাকা বেতন পাই। ভোর ৬ টা থেকে কাজ শুরু করলে বেলা ১১টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। এ কাজ করে ভালোই চলে যাচ্ছে আমাদের সংসার।

মিরসরাই উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম বলেন, উপজেলায় এবার ১৫০ একর জমিতে কচু আবাদ করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চাষ হলেও সর্বোচ্চ আবাদ হয় মিরসরাই পৌরসভা ও মঘাদিয়া ইউনিয়নে। এসব এলাকার কৃষকরা কচু চাষে ভালো করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন