শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাব-আপেল বেগুনে ফলন বেশি

ডাব-আপেল বেগুনে ফলন বেশি

দেখতে আপেলের মতো গোলাকার, তাই এ জাতের নাম আপেল। দেখতে অবিকল ডাবের মতো এ জন্য জাতের নাম দেয়া হয়েছে ডাব বেগুন। বেগুনের এ দুটি জাতই আমাদের দেশীয় উচ্চ ফলনশীল জাত। এ জাতের বীজ সংগ্রহ করা হয়েছে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার এক কৃষকের কাছ থেকে। এবারই প্রথম এ জাতের বেগুন চাষ করেছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কৃষকরা। চলতি খরিপ-১ মৌসুমে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বেগুনের এ নতুন দুটি জাত কৃষকদের দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করানো হয়েছে। উপজেলার ১২ জন কৃষক ২০ শতক করে প্রায় ১ হেক্টর জমিতে আপেল ও ডাব বেগুন চাষ করেছেন। প্রথম চাষেই হয়েছে বাম্পার ফলন। ফসলের মাঠে এখন গাছে গাছে ঝুলছে ডাব আর আপেল বেগুন।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, এ জাতের বেগুন গাছে পোকা মাকড় বা রোগবালাই কম হয়। গাছে একটানা চার মাস ফসল ধরে। ফলের রং লালছে বেগুনি। খুবই নরম। একেকটি বেগুনের ওজন হয় ৭০০ থেকে ১০০০ গ্রাম। এ জাতের বীজ রোপণ করতে হয়  কার্তিক মাসে। ৬০ দিন পর পৌষ মাসে গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। আর মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ফল বিক্রয় উপযোগী হয়। সরেজমিনে খলিলপুর গ্রামে দেখা যায়, এক থেকে দেড় ফুট লম্বা গাছে গাছে বেগুন ঝুলে আছে। কোনো গাছের বেগুন ডাব আকৃতির, কোনো গাছে আপেলের মতো গোলাকার। ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা খুশি মনে মাঠ থেকে বেগুন তুলছেন। সবকটি প¬টেই বেগুন চাষ করা হয়েছে রাসায়নিক সার ছাড়া। প্রয়োজনে শুধু জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক দেয়া হয়েছে। এ সময় ওই গ্রামের কৃষক মুহিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি এবারই প্রথম নতুন দুই জাতের বেগুন চাষ করেছেন। আগেও বেগুন চাষ করছেন তবে, অন্য জাত। আপেল ও ডাব বেগুন চাষ করে তিনি মহাখুশি। কারণ অন্য জাতের চেয়ে এই নতুন জাত চাষ করে তিনি অধিক ফলন পেয়েছেন। ফসলে মাঠে পোকা ধরেনি। কোনো রোগবালাইয়েও আক্রমণ করেনি। তিনি মাঘের প্রথম থেকে বেগুন বিক্রি করছেন। এ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৩০০ কেজি। প্রতি কেজি দাম পেয়েছেন গড়ে ৩৫ টাকা করে। আরও ২ হাজার কেজির মতো বিক্রি করতে পাবেন। মাঠে তার খরচ হয়েছিল ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। আর খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হবে ৫০ হাজার টাকা। তার মাঠের ফলন দেখে উচ্ছসিত গ্রামের অন্য কৃষকরা।

আরও পড়ুনঃ  আত্রাইয়ে চায়না জালের ফাঁদে দেশিয় প্রজাতির মাছ

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, এ জাত দুটি হাইব্রিড নয়। দেশীয় উচ্চফলনশীল। কৃষক নিজেরাই বীজ রাখতে পারবে। আমরা ১২টি প্রদর্শনী প্লট থেকেই কৃষকদের বীজ সংগ্রহ করতে বলেছি। যেহেতু এ জাতের বেগুন চাষ করে কৃষকরা লাভবান, তাই উপজেলা ৯টি ইউনিয়নের কৃষকদের মঝে আমরা এই জাত ছড়িয়ে দিতে চাই।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন