শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঙ্গির ফলনে কৃষকের হাসি

বাঙ্গির ফলনে কৃষকের হাসি

রাজবাড়ীতে চলতি বছর বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। দিগন্তজোড়া বিস্তীর্ণ মাঠে যে দিকেই চোখ যায় সেদিকেই কেবল বাঙ্গি চাষের সমারোহ। চৈত্রের বাহারি মৌসুমি ফল বাঙ্গির বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় জেলার বাঙ্গি চাষীদের মুখে এখন খুশির হাসি। উৎপাদিত বাঙ্গি নিয়ে ভালো লাভের আশার স্বপ্ন বুনছেন চাষীরা। অল্প পুঁজিতে ভালো মুনাফা হওয়ায় প্রতি বছরই রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে বাঙ্গি চাষাবাদ হচ্ছে।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রাজবাড়ী জেলার ৫টি উপজেলাতেই বাঙ্গির চাষ হয়ে থাকে। এবছর জেলায় ৫৩ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির চাষ হয়েছে। জেলা সদরে সবচেয়ে বেশি বাঙ্গির চাষ হয়। চলতি মৌসুমে জেলা সদরে ৩০ হেক্টর, পাংশা উপজেলায় ৩ হেক্টর, কালুখালী উপজেলায় ১০ হেক্টর এবং গোয়ালন্দ উপজেলাতে ৫ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের বাঙ্গি চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রায় ৯৬০ মেট্টিক টন বাঙ্গি উৎপাদন হবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে রাজবাড়ী জেলা সদরের শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার কৃষকেরা রমজান মাসকে সামনে রেখে বাঙ্গির আবাদ করেছেন। মাঠের পর মাঠ শুুধু বাঙ্গির চাষ।

কৃষক গফুর কাজী বলেন, আমাদের এখানে ৩০ শতাংশে এক পাখি জমি। এবার ১ পাখি জমিতে বাঙ্গির চাষাবাদ করেছি। ফলন ভালোই হয়েছে। বাঙ্গি পাকতে শুরু করেছে। বাজারে নিয়ে বিক্রিও করতে শুরু করেছি। তবে কিছু বাঙ্গিতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

আরেক চাষি আ. ছাত্তার সেখ বলেন, আমিও ১পাখি জমিতে বাঙ্গির চাষ করেছি। প্রায় ৬০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি করতে পারবো বলে ধারনা করছি।

আরও পড়ুনঃ  ঠাকুরগাঁওয়ে পাট চাষিদের চোখে সোনালী স্বপ্ন

চাষি কুহাই শেখ বলেন, বাঙ্গি ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি। বাজারে আকার ভেদে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় কুটির হাট বাজারেরর ফল বিক্রেতা সাগর মিয়া জানান, আমরা চলতি বছর প্রতি ১০০ পিস বাঙ্গি ৬ হাজার টাকায় কৃষকের জমি থেকে ক্রয় করেছি। জমি থেকে ক্রয় করার পর এগুলো বাজারে নেওয়ার আগে মজুরি ও গাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে প্রতি পিসে সর্ব্বোচ ১০ টাকা লাভ থাকলেই বিক্রি করে দিই।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিরচালক এস এম সহীদ নূর  আকবর জানান, চলতি মৌসুমে রাজবাড়ীতে ৫৩ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। যা থেকে  ৯৬০ মেট্রিক টন বাঙ্গি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলটিতে শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেলস থাকায় বাজারেও বাঙ্গির ভালো চাহিদা রয়েছে। এছাড়া কম সুগার থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। বাঙ্গি একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। তীব্র গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে বাঙ্গির ভূমিকা অপরিসীম। তীব্র গরমে রোজা থাকার পর শরীরের ক্লান্তির ছাপ মুছতে বেশিরভাগ বাঙালির ইফতারেই বাঙ্গির চাহিদা থাকে। তাই বাজারে বাঙ্গির চাহিদা বেড়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন